কালিয়াকৈরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় কিশোরের মৃত্যু
- আপডেট টাইম : ০৫:২৮:৫৭ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪
- / ১২১ ৫০০০.০ বার পাঠক
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর বাইপাস মহাসড়কে ফুটওভার ব্রিজের নিচে (৯ এপ্রিল) মঙ্গলবার ঢাকাগামী এক মাইক্রোবাসের চাপায় রিফাত (১৭) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী মুরশিদ ( লতিফপুর পূর্বপাড়া তোলার গোডাউনের পাশে ইউনূসের বাড়ির ভাড়াটিয়া) ইজি বাইক চালক জানান, দুপুর আনুমানিক ২:৩০ মিনিটের সময় একটি পিকআপ টাঙ্গাইলের দিক থেকে দ্রুতগতিতে এসে ফুটওভার ব্রিজের নিচে সড়কের পাশের আইল্যান্ডের সাথে বিকট শব্দে ধাক্কা মারে। এতে পিকআপের চালক ও হেলপার কেউ আহত হয়নি বলে জানান।
ঈদ উপলক্ষে হাইওয়ে পুলিশের একাধিক সদস্য কর্তব্যরত অবস্থায় সড়কের দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থান করছিল। তাৎক্ষণিক পুলিশ সদস্যরা ওই পিকআপের কাছে যায় এবং আশপাশের উৎসব জনতা ও ঘটনাস্থলে আসেন। ওই মুহূর্তেই টাঙ্গাইলের দিক থেকে ঢাকার দিকে যাওয়ার জন্য একটি মাইক্রোবাস খুবই দ্রুত গতিতে এসে দুর্ঘটনাকারী পিকআপের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রিফাতের উপর দিয়ে পিকআপের সঙ্গে লাগিয়ে দিলে রিফাত রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত্যু যন্ত্রণায় কাটরাতে থাকে।
এমন সময় দুর্ঘটন স্থলে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা দ্রুত কালিয়াপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত রিফাতকে নিয়ে যান বলে মুরশিদ জানান।
খালেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার মারজিয়া বলেন, কিশোর রিফাতকে আমাদের এখানে আনলে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় রিফাত মৃত। তিনি আরো বলেন আমাদের হসপিটালে বর্তমানে ইসিজির সুবিধা না থাকায় রিফাতের লাশ ইসিজি করার জন্য কালিয়াকৈর বাইপাস সংলগ্ন শুভেচ্ছা ক্লিনিকে পাঠায়। এরপর ইসিজি রিপোর্ট রিফাতের লাশ বহনকারী এম্বুলেন্স উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে ইসিজি রিপোর্ট দেখে রিফাতের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে সার্টিফিকেট প্রদান করি বলে ডাক্তার মারজিয়া জানান।
সড়কের দুর্ঘটনায় নিহত রিফাতের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় জেলায়। নিহত রিফাতের উপস্থিত স্বজনেরা বলেন, রিফাত গোলাম নবী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র। পাশাপাশি রিফাত ওষুধ কোম্পানির একটি চাকরি করেন। নিহত আরিফাতের বাবা সালাম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি আমার ছেলেকে নিয়ে লতিফপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে সামছু মিয়ার বাড়িতে অনেক বছর যাবত ভাড়া থাকি। আমি ইজি ভাক চালাই আর আমার ছেলে পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করতো। এমন করে বলতে বলতে নিহত রিফাতের বাবা হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। সালাম বিলাপ করতে থাকে এই দুনিয়ায় আমার ছেলে ছাড়া বেঁচে থেকে আমার লাভ নেই বলে হাসপাতালে দেয়ালে মাথা চাপড়াতে গেলে উপস্থিত স্বজনেরা বাধা দেয় এবং সান্তনা দিতে থাকে।
এদিকে নিহত রিফাতের বাবার কান্না ও আহাজারি দেখে উপস্থিত জনতা ও পুলিশ সদস্য সহ সকলের চোখে পানি এসে যায়।
অতঃপর না হুজুর হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যরা রিফাতের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় দৈনিক সময়ের কণ্ঠ পত্রিকা কে বলেন লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজে নিয়ে যেতে হবে।
নাওজোর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন মুঠোফোনে দৈনিক সময়ের কন্ঠ পত্রিকা কে বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজে পাঠিয়েছি। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং মহাসড়কের দুর্ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটন করে গাড়ি ও গাড়ির চালক এবং কি প্রয়োজনে মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।