ঢাকা ১০:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ নোয়াগড় গ্রামে কোটি টাকার হিসাব নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ওসিসহ অর্ধশতাধিক আহত।। সেনাবাহিনীর হাতে ১১ জন আটক ভৈরবে রেলওয়ে থানা পুলিশের হাতে মাদক দ্রব্য গাঁজাসহ হিজরা গ্রেফতার পীরগঞ্জে জুলাই-আগষ্টে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা ধুলাউড়ি বাজারে শুরু হয়েছে পাঁচটি সেলুন পাঠাগার সুন্দরবনের খালে কাঁকড়া ধরায় চাঁদা দাবি। চাঁদা না দেওয়ায় মারধরের অভিযোগ ডাকাত তরিকুলের বিরুদ্ধে আইনজীবী হত্যার নিউজে পুলিশের বক্তব্য নেয়নি রয়টার্স আজমিরীগঞ্জে মোবাইল কোর্টের অভিযানে একটি মাটি ভর্তি ট্রাকটর আটক আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সরকারি জায়গা দখল মুক্ত করে উপজেলা প্রশাসন ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানালো হেফাজতে ইসলাম পৃথক মামলায় সাবেক মন্ত্রী আনিসুল-কামরুল রিমান্ডে

টাকা নিয়ে আটক জুয়ারুদের ছেড়ে দেওয়ায় রাণীশংকৈলে ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

তাহেরুল ইসলাম তামিম ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁওঃ
  • আপডেট টাইম : ০৩:২৬:৪৮ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • / ৬৩ ৫০০০.০ বার পাঠক

ঠাকুরগাঁওয়ে রাণীশংকৈল থানার এক উপ-পরির্দশক(এসআই) চারজন সহকারী উপ-পরির্দশক(এএসআই) ও এক ডিএসবি পুলিশ কনস্টেবলকে হঠাৎ করেই রাণীশংকৈল থানা থেকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী প্রত্যাহার করে নিয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ।

হঠাৎ একসঙ্গে ৬ জন পুলিশ সদস্য প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে থানা চত্বরে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা। তবে এর নেপথ্যে উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের কোচঁল এলাকায় ৬জন জুয়া খেলোয়ারকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আটক করে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
টাকা নিয়ে জুয়ারুদের ছেড়ে দেওয়ার পরের দিনই তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।আর এতেই সৃষ্টি হয় সমালোচনা আলোচনা।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইনে সংযুক্তের অভিযোগ অস্বীকার করে রাণীশংকৈল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সোহেল রানা বলেন, ডির্পাটমেন্টাল পদ্ধতিতেই এই থানায় তাদের চাকুরীর বয়স বেশি হওয়ার কারণেই তাদের এই থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
রাণীশংকৈল থানা থেকে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ লাইনে হঠাৎ সংযুক্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, উপ-পরির্দশক(এস আই) এরশাদ আলী,সহকারী উপ-পরির্দশক(এএসআই) গৌতম চন্দ্র রায়,আনিছুর রহমান মোল্লা,সাদেকুল ইসলাম,জাকির হোসেন ও ডিএসবি রেন্টু আলম

হঠাৎ ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ লাইনে এক সাথে ছয়জন পুলিশ সদস্যসের সংযুক্ত হওয়ার কারণ নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হলে। এর নেপথ্যের ঘটনা উদঘাটনে নামে এ প্রতিবেদক।বিভিন্ন তথ্য সুত্রে জানা যায়, এস আই এরশাদসহ ছয় পুলিশ সদস্য রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের কোঁচল এলাকায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারী অভিযানে যায়। সেখানে মানিক নামে এক ব্যক্তির ঘরে লেহেম্বা ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য শাহাজাহন আলীসহ মোট ছয়জন জুয়ার আসর বসিয়েছেন।
সেখানে পুলিশ সদস্যরা হানা দেয়। সে-সময় সকল জুয়ারুদের শরীর সার্চ করে। ইউপি সদস্য শাহাজাহান বাদে পাঁচজন জুয়া খেলোয়ারদের হাতে হ্যান্ডকাফ পড়ায়। পরে তাদের মধ্যে একজন লেহেম্বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে পুলিশদের মুঠোফোনে কথা বলার জন্য ফোন ধরিয়ে দিলে পুলিশ সে ফোন ধরেননি। চেয়ারম্যানও কথা বলতে পারেননি। পরবর্তী বিভিন্ন দেন দরবার করে প্রায় দুই লাখ টাকার বিনিময়ে জুয়ারুরা ঘটনাস্থলেই ছাড়া পায়। উল্লেখিত এ তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে ইউপি সদস্য শাহাজাহান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনা এড়িয়ে যেতে চান। তবে পরে তিনি বলেন, জুয়া খেলায় তিনি ছিলেন না । তবে এমন ঘটনার খবর তিনি শুনেছেন।

পরে কোঁচল এলাকার স্থানীয়দের সহায়তায় ওই জুয়া খেলায় থাকা জবেদ আলীর গত মঙ্গলবার বলেন, পুলিশ দেখার সাথে সাথেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামকে তিনি ফোন দেন। ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাশুনে পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে চান। কিন্তু পুলিশ কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। অপর জন বলেন,পুলিশ ঘরে ঢুকেই তাদের গালমন্দসহ চড়, থাপ্পর লাথি মারেন। পরে সকলকে সার্চ করেন। তাতে ইউপি সদস্য শাহাজাহানের কাছে এক হাজার ছয় শত টাকা। আরেকজন ধান ব্যবাসীয়র কাছে ৫১ হাজার টাকা অন্য আরো দুই জনের কাছে ২৩ হাজার টাকাসহ মোট ৬ জনের কাছে প্রায় এক লাখ টাকা পাই। টাকাগুলো তারা নিয়ে নেন। পরে ইউপি সদস্য শাহাজাহানকে বাদে সকলকে হ্যান্ডকাফ পড়ান। পরে বিভিন্ন দেনদরবার করে প্রায় দুই লাখ টাকার বিনিময়ে তারা পুলিশের কাছ থেকে ঘটনাস্থলেই ছাড়া পান। ওই ব্যক্তি আরো জানান, তাদের হাতের হ্যান্ডকাফ খুলে পাচঁজনের কাছে ভিডিও বক্তব্য নেওয়া হয়। তাদের কাছে কোন টাকা পয়সা নেওয়া হয়েছে কিনা? টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করিয়ে তাদের বক্তব্য ধারণ করা হয় বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে বৃহস্পতিবার রাশীংকৈল থানা থেকে প্রত্যাহারকৃত উপ-পরির্দশক(এস আই) এরশাদ আলীকে মুঠোফানে ফোন দিলে তিনি জানান, এগুলো আর কি বলবো,মানুষের উপকার করলে এই হয় বলে মন্তব্য করেন।
লেহেম্বা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি একজন তাকে জানিয়েছিল। তিনি ফোনে কথা বলতে চাইলেও দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা তার সাথে কথা বলতে চাননি। তবে তিনি শুনেছেন টাকার বিনিময়ে ওই জুয়া খেলোয়ারদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সোহেল রানা বলেন, টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলোয়ারদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি তিনি জানেন না। তিনি তদন্ত করে দেখবেন ঘটনা কতটুকু সত্য।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার(এসপি) উত্তম প্রসাদ পাঠক মুঠোফোনে বলেন, ৬জনকে ক্লোজ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

টাকা নিয়ে আটক জুয়ারুদের ছেড়ে দেওয়ায় রাণীশংকৈলে ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

আপডেট টাইম : ০৩:২৬:৪৮ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ঠাকুরগাঁওয়ে রাণীশংকৈল থানার এক উপ-পরির্দশক(এসআই) চারজন সহকারী উপ-পরির্দশক(এএসআই) ও এক ডিএসবি পুলিশ কনস্টেবলকে হঠাৎ করেই রাণীশংকৈল থানা থেকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারী প্রত্যাহার করে নিয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ।

হঠাৎ একসঙ্গে ৬ জন পুলিশ সদস্য প্রত্যাহারের বিষয়টি নিয়ে থানা চত্বরে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনা। তবে এর নেপথ্যে উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের কোচঁল এলাকায় ৬জন জুয়া খেলোয়ারকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আটক করে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
টাকা নিয়ে জুয়ারুদের ছেড়ে দেওয়ার পরের দিনই তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।আর এতেই সৃষ্টি হয় সমালোচনা আলোচনা।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইনে সংযুক্তের অভিযোগ অস্বীকার করে রাণীশংকৈল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সোহেল রানা বলেন, ডির্পাটমেন্টাল পদ্ধতিতেই এই থানায় তাদের চাকুরীর বয়স বেশি হওয়ার কারণেই তাদের এই থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
রাণীশংকৈল থানা থেকে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ লাইনে হঠাৎ সংযুক্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, উপ-পরির্দশক(এস আই) এরশাদ আলী,সহকারী উপ-পরির্দশক(এএসআই) গৌতম চন্দ্র রায়,আনিছুর রহমান মোল্লা,সাদেকুল ইসলাম,জাকির হোসেন ও ডিএসবি রেন্টু আলম

হঠাৎ ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ লাইনে এক সাথে ছয়জন পুলিশ সদস্যসের সংযুক্ত হওয়ার কারণ নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হলে। এর নেপথ্যের ঘটনা উদঘাটনে নামে এ প্রতিবেদক।বিভিন্ন তথ্য সুত্রে জানা যায়, এস আই এরশাদসহ ছয় পুলিশ সদস্য রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের কোঁচল এলাকায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারী অভিযানে যায়। সেখানে মানিক নামে এক ব্যক্তির ঘরে লেহেম্বা ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্য শাহাজাহন আলীসহ মোট ছয়জন জুয়ার আসর বসিয়েছেন।
সেখানে পুলিশ সদস্যরা হানা দেয়। সে-সময় সকল জুয়ারুদের শরীর সার্চ করে। ইউপি সদস্য শাহাজাহান বাদে পাঁচজন জুয়া খেলোয়ারদের হাতে হ্যান্ডকাফ পড়ায়। পরে তাদের মধ্যে একজন লেহেম্বা ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সাথে পুলিশদের মুঠোফোনে কথা বলার জন্য ফোন ধরিয়ে দিলে পুলিশ সে ফোন ধরেননি। চেয়ারম্যানও কথা বলতে পারেননি। পরবর্তী বিভিন্ন দেন দরবার করে প্রায় দুই লাখ টাকার বিনিময়ে জুয়ারুরা ঘটনাস্থলেই ছাড়া পায়। উল্লেখিত এ তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে ইউপি সদস্য শাহাজাহান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনা এড়িয়ে যেতে চান। তবে পরে তিনি বলেন, জুয়া খেলায় তিনি ছিলেন না । তবে এমন ঘটনার খবর তিনি শুনেছেন।

পরে কোঁচল এলাকার স্থানীয়দের সহায়তায় ওই জুয়া খেলায় থাকা জবেদ আলীর গত মঙ্গলবার বলেন, পুলিশ দেখার সাথে সাথেই স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামকে তিনি ফোন দেন। ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাশুনে পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে চান। কিন্তু পুলিশ কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। অপর জন বলেন,পুলিশ ঘরে ঢুকেই তাদের গালমন্দসহ চড়, থাপ্পর লাথি মারেন। পরে সকলকে সার্চ করেন। তাতে ইউপি সদস্য শাহাজাহানের কাছে এক হাজার ছয় শত টাকা। আরেকজন ধান ব্যবাসীয়র কাছে ৫১ হাজার টাকা অন্য আরো দুই জনের কাছে ২৩ হাজার টাকাসহ মোট ৬ জনের কাছে প্রায় এক লাখ টাকা পাই। টাকাগুলো তারা নিয়ে নেন। পরে ইউপি সদস্য শাহাজাহানকে বাদে সকলকে হ্যান্ডকাফ পড়ান। পরে বিভিন্ন দেনদরবার করে প্রায় দুই লাখ টাকার বিনিময়ে তারা পুলিশের কাছ থেকে ঘটনাস্থলেই ছাড়া পান। ওই ব্যক্তি আরো জানান, তাদের হাতের হ্যান্ডকাফ খুলে পাচঁজনের কাছে ভিডিও বক্তব্য নেওয়া হয়। তাদের কাছে কোন টাকা পয়সা নেওয়া হয়েছে কিনা? টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করিয়ে তাদের বক্তব্য ধারণ করা হয় বলেও তিনি জানান।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে বৃহস্পতিবার রাশীংকৈল থানা থেকে প্রত্যাহারকৃত উপ-পরির্দশক(এস আই) এরশাদ আলীকে মুঠোফানে ফোন দিলে তিনি জানান, এগুলো আর কি বলবো,মানুষের উপকার করলে এই হয় বলে মন্তব্য করেন।
লেহেম্বা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি একজন তাকে জানিয়েছিল। তিনি ফোনে কথা বলতে চাইলেও দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা তার সাথে কথা বলতে চাননি। তবে তিনি শুনেছেন টাকার বিনিময়ে ওই জুয়া খেলোয়ারদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সোহেল রানা বলেন, টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলোয়ারদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এটি তিনি জানেন না। তিনি তদন্ত করে দেখবেন ঘটনা কতটুকু সত্য।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার(এসপি) উত্তম প্রসাদ পাঠক মুঠোফোনে বলেন, ৬জনকে ক্লোজ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কাজ করা হচ্ছে।