ঢাকা ০৩:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
মানুষের তৈরি মতবাদ আল্লাহর আইনের সাথে চ্যালেঞ্জ করার শামিল – ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগ নেতার দখলের চেষ্টা।এই বিষয়ে সময়ের কন্ঠস্বরে নিউজ প্রকাশের পর এসিল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা ফার্মেসী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সমগ্র বাংলাদেশ) পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখা কমিটির সকলকে সনদ প্রদান ও আলোচনা সভা ২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’ পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

সরকারি চাকরি মানে আলাউদ্দিনের চেরাগ অভিযুক্ত হয়ে দুর্নীতির দায় বদলি হয়েছেন

সময়ের অনুসন্ধান বিশেষ প্রতিনিধি:
  • আপডেট টাইম : ০৯:৪৩:৩০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ২৩৪ ৫০০০.০ বার পাঠক

প্রধান ইমারত পরিদর্শক ইমরান হোসেন

চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী একই জায়গায় ৩ বছরের বেশি দায়িত্ব পালনের নিয়ম না থাকলেও রাজউক জোন ৬/১ এর প্রধান ইমারত পরিদর্শক ইমরান হোসেন দায়িত্ব করে চলেছেন প্রায় ৬ বছরের কাছাকাছি সময়কাল যাবত।

রাজউক সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ইমরান হোসেন ইমারত পরিদর্শক হিসেবে রাজউক জোন ৬/১ এ যোগদান করেছেন। যোগদানের পর থেকে ইমরান হোসেন বিভিন্ন জনকে ব্যবহার করে রাজউকে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছেন। এই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি বড় সিন্ডিকেট। কয়েকজন পরিদর্শক, সার্ভেয়ার, এমনকি তারই জোনের অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ এই সিন্ডিকেটের সদস্য। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ম বহির্ভূত ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করে লাখ লাখ টাকার বানিজ্যে মেতে উঠেছেন তিনি। তার কল্যানেই ঢাকার কিছু এলাকা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এমন দাবি করেছেন রাজউক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

এছাড়া প্রভাব খাটিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভবনের ছাড়পত্র ও নকশা পাইয়ে দিয়েও লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন তিনি। নকশা পাইয়ে দেয়ার ব্যাবসা, ঘুষ লেনদেন ও দু/একটি কাগজপত্র জালিয়াতির জন্য তিনি বেনামে এনএক্স ভবনের পিছনে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব অফিস যা অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

খিলগাঁও, বাসাবো, মাদারটেক, যাত্রাবাড়ী, আর কে মিশন রোডের আশেপাশেসহ আরও কিছু এলাকার দায়িত্ব পালন করছেন ইমরান যা অন্যান্য প্রধান ইমারত পরিদর্শকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি এলাকা। এমনকি তিনি অঘোষিতভাবে রাজউক জোন ৬ এর পুরো এলাকার বিভিন্ন অনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করেন অর্থের বিনিময়ে। তার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য জোন ৬/১ এর অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথের সাথে যোগসাজশে লাখ লাখ টাকা কামিয়ে আসছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এসব টাকার ভাগ বিভিন্ন মহলে প্রদান করে ইমরান বছরের পর বছর রাজউক জোন ৬/১ এ বীর দর্পে বিধিমালার তোয়াক্কা না করে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তিনি সবসময় ১০/১২ জন ক্যাডার বাহিনী নিয়ে অফিস করেন ও রাজউকে চলাচল করেন। যা সরেজমিনে অনুসন্ধান করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। ইমরান হোসেন এতদিন প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকলেও সম্প্রতি তাকে প্রমোশনের মাধ্যমে প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে স্থায়ীকরণ করা হয়েছে।

কিন্তু প্রমোশনের পরেও ইমরানকে বদলি না করায় খোদ রাজউকের কর্মকর্তারা এমন ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের একজন প্রধান ইমারত পরিদর্শক দৈনিক আমার বার্তাকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রমোশনের পরের দিনই ইমরানকে বদলি করার কথা। আমাদের প্রমোশনের পরের দিনই আমাদের বদলি করেছে কর্তৃপক্ষ যা সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। কিন্তু ইমরানের বেলায় এমন ব্যাতিক্রম ঘটনা আমাদের বিস্ময় করেছে। প্রায় ৬ বছরের কাছাকাছি সময় একই জায়গায় কর্মরত থাকতে পারে কিনা? এমনকি প্রমোশনের পরেও ইমরানকে বদলি না করার কারণ জানতে কিছুদিন আগে রাজউকের উপ-পরিচালক (প্রশাসন-১) বিধান রায়ের মোবাইলে ফোন করলে তিনি বলেন, প্রভাবশালী হওয়ায় এমনটি হয়েছে। তবে পরের দিনই ইমরান হোসেনকে রাজউক জোন-৫/৩ এ বদলি করা হয়। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় ইমরান হোসেনকে আবারও রাজউক জোন-৬ এ অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয় যা সমালোচনার ঝড় ওঠে খোদ রাজউক কর্মকর্তাদের মাঝে।

এমন ঘটনায় রাজউক কর্মকর্তাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও কেউই মুখ খুলতে সাহস করছেন না ইমরানের ভয়ে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ইমরানের একটি শক্তিশালী ক্যাডার বাহিনী সক্রিয় রয়েছে রাজউকে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে হতে হয় অপমান ও লাঞ্চিত।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের একজন কর্মকর্তা বলেন, রাজউক জোন-৫ পুরনো ঢাকা এলাকা, আর জোন-৬ ডেমরা এলাকা। তাহলে ঢাকার দুই মেরুর দুটি এলাকায় ইমরান কিভাবে দায়িত্ব পালন করবে? এমন প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, দুটি জোনে আলাদাভাবে অথরাইজড অফিসার রয়েছে, তাহলে ইমরান কিভাবে দুজন অথরাইজ অফিসারের অধীনে দায়িত্ব পালন করবে? এছাড়া এমন দায়িত্ব বিধিসম্মত হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। এসব ব্যাপারে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়ার বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।অনুসন্ধান চলছে

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সরকারি চাকরি মানে আলাউদ্দিনের চেরাগ অভিযুক্ত হয়ে দুর্নীতির দায় বদলি হয়েছেন

আপডেট টাইম : ০৯:৪৩:৩০ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

প্রধান ইমারত পরিদর্শক ইমরান হোসেন

চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী একই জায়গায় ৩ বছরের বেশি দায়িত্ব পালনের নিয়ম না থাকলেও রাজউক জোন ৬/১ এর প্রধান ইমারত পরিদর্শক ইমরান হোসেন দায়িত্ব করে চলেছেন প্রায় ৬ বছরের কাছাকাছি সময়কাল যাবত।

রাজউক সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ইমরান হোসেন ইমারত পরিদর্শক হিসেবে রাজউক জোন ৬/১ এ যোগদান করেছেন। যোগদানের পর থেকে ইমরান হোসেন বিভিন্ন জনকে ব্যবহার করে রাজউকে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছেন। এই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি গড়ে তুলেছেন একটি বড় সিন্ডিকেট। কয়েকজন পরিদর্শক, সার্ভেয়ার, এমনকি তারই জোনের অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ এই সিন্ডিকেটের সদস্য। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিয়ম বহির্ভূত ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করে লাখ লাখ টাকার বানিজ্যে মেতে উঠেছেন তিনি। তার কল্যানেই ঢাকার কিছু এলাকা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এমন দাবি করেছেন রাজউক সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।

এছাড়া প্রভাব খাটিয়ে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ভবনের ছাড়পত্র ও নকশা পাইয়ে দিয়েও লাখ লাখ টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন তিনি। নকশা পাইয়ে দেয়ার ব্যাবসা, ঘুষ লেনদেন ও দু/একটি কাগজপত্র জালিয়াতির জন্য তিনি বেনামে এনএক্স ভবনের পিছনে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব অফিস যা অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

খিলগাঁও, বাসাবো, মাদারটেক, যাত্রাবাড়ী, আর কে মিশন রোডের আশেপাশেসহ আরও কিছু এলাকার দায়িত্ব পালন করছেন ইমরান যা অন্যান্য প্রধান ইমারত পরিদর্শকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি এলাকা। এমনকি তিনি অঘোষিতভাবে রাজউক জোন ৬ এর পুরো এলাকার বিভিন্ন অনৈতিক সমস্যা মোকাবিলা করেন অর্থের বিনিময়ে। তার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য জোন ৬/১ এর অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথের সাথে যোগসাজশে লাখ লাখ টাকা কামিয়ে আসছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। এসব টাকার ভাগ বিভিন্ন মহলে প্রদান করে ইমরান বছরের পর বছর রাজউক জোন ৬/১ এ বীর দর্পে বিধিমালার তোয়াক্কা না করে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তিনি সবসময় ১০/১২ জন ক্যাডার বাহিনী নিয়ে অফিস করেন ও রাজউকে চলাচল করেন। যা সরেজমিনে অনুসন্ধান করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। ইমরান হোসেন এতদিন প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকলেও সম্প্রতি তাকে প্রমোশনের মাধ্যমে প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে স্থায়ীকরণ করা হয়েছে।

কিন্তু প্রমোশনের পরেও ইমরানকে বদলি না করায় খোদ রাজউকের কর্মকর্তারা এমন ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের একজন প্রধান ইমারত পরিদর্শক দৈনিক আমার বার্তাকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রমোশনের পরের দিনই ইমরানকে বদলি করার কথা। আমাদের প্রমোশনের পরের দিনই আমাদের বদলি করেছে কর্তৃপক্ষ যা সবার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। কিন্তু ইমরানের বেলায় এমন ব্যাতিক্রম ঘটনা আমাদের বিস্ময় করেছে। প্রায় ৬ বছরের কাছাকাছি সময় একই জায়গায় কর্মরত থাকতে পারে কিনা? এমনকি প্রমোশনের পরেও ইমরানকে বদলি না করার কারণ জানতে কিছুদিন আগে রাজউকের উপ-পরিচালক (প্রশাসন-১) বিধান রায়ের মোবাইলে ফোন করলে তিনি বলেন, প্রভাবশালী হওয়ায় এমনটি হয়েছে। তবে পরের দিনই ইমরান হোসেনকে রাজউক জোন-৫/৩ এ বদলি করা হয়। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় ইমরান হোসেনকে আবারও রাজউক জোন-৬ এ অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয় যা সমালোচনার ঝড় ওঠে খোদ রাজউক কর্মকর্তাদের মাঝে।

এমন ঘটনায় রাজউক কর্মকর্তাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলেও কেউই মুখ খুলতে সাহস করছেন না ইমরানের ভয়ে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ইমরানের একটি শক্তিশালী ক্যাডার বাহিনী সক্রিয় রয়েছে রাজউকে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে হতে হয় অপমান ও লাঞ্চিত।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের একজন কর্মকর্তা বলেন, রাজউক জোন-৫ পুরনো ঢাকা এলাকা, আর জোন-৬ ডেমরা এলাকা। তাহলে ঢাকার দুই মেরুর দুটি এলাকায় ইমরান কিভাবে দায়িত্ব পালন করবে? এমন প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, দুটি জোনে আলাদাভাবে অথরাইজড অফিসার রয়েছে, তাহলে ইমরান কিভাবে দুজন অথরাইজ অফিসারের অধীনে দায়িত্ব পালন করবে? এছাড়া এমন দায়িত্ব বিধিসম্মত হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। এসব ব্যাপারে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়ার বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।অনুসন্ধান চলছে