ঢাকা ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু জামালপুরে ধানের বাজার মধ্যস্বত্বভোগীরদের দখলে রানীশংকৈলে জিপিএ—৫ পাওয়া ৪ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের বাধা অর্থিক সংকট কালিয়াকৈরে এক নারী মাদক ব্যবসায়ী হেরোইনসহ গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উৎযাপন উপলক্ষে সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে হারানো টাকা মালিকের হাতে ফেরত দিয়ে দিষ্টান্ত স্হাপন করলো পুলিশ ফুলবাড়ীতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কতৃক মসজিদ পরিস্কার অভিযান ফুলবাড়ীতে ভুট্টা বোঝাই ট্রলির চালক নিজ গাড়িতে চাপা পড়ে নিহত বিবাহিত অছাত্র কিশোরগ্যাং এর লিডার রুবেল হোসেন জয়কে দিয়ে এবার ছাত্রলীগের নতুন কমিটি করা হলো কুষ্টিয়ায় পদ্মায় ডুবে যাওয়া নিখোঁজ কিশোরের মরদেহ উদ্ধার

মরণনেশা ইয়াবার জোয়ারে ভাসছে উখিয়ার যুব সমাজ

মিয়ানমারে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত ইয়াবার সিংহভাগ চালান উখিয়ার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে পাচারকারীদের মাধ্যমে এ দেশে পাচার হয়ে আসছে। পাচারকারীরা মিয়ানমার এলাকা থেকে ইয়াবা এনে উখিয়া উপজেলাসহ গ্রামগঞ্জে মজুদ পূর্বক সুযোগ বুঝে কৌশলে সারা দেশে পাচার করে আসছে। সীমান্তরক্ষী বিজিবির কড়া নজরদারি থাকা স্বত্বেও কিছু দালালরা রাতের আধাঁরে হাতবদল করে বিভিন্ন স্থানে পাচারের পাশাপাশি খোলামেলা বাজারজাত করছে।
সহজলভ্যে নাগালে পাওয়ার সুবাদে ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নেশার টাকা যোগাড় করতে পিতা-মাতার অবাধ্য হয়ে সন্তানেরা নানা অপরাধ প্রবণতায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে পরিবার পরিজনেরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত জীবন নিয়ে শংকিত হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আন্তরিক না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন, সামাজিক জীবন ব্যবস্থার বেহাল পরিণতি হতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিন কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি এলাকা ঘুরে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার সাথে আলাপ করে জানা যায়, বস্তিতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অনেকেই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন রোহিঙ্গা জানায়, যুবতী মহিলারা ইয়াবা বিক্রিতে সম্পৃক্ত হওয়ার সুবাদের যুব সমাজ মরণনেশা ইয়াবার প্রতি ঝুঁকেছে।
কুতুপালং এর বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হক খান জানান, সন্ধ্যা নামার পরপরই দক্ষিণ কুতুপালং এলাকা ইয়াবার নগরীতে পরিণত হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে নামী দামী বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে আসা অচেনা, অজানা লোকজন ইয়াবা সেবন করছে আর ইয়াবার চালান নিয়ে অনায়াসে সটকে পড়ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডিবি পুলিশ, হাইওয়ে, থানা পুলিশ ও বালুখালী কাস্টমস্ ইতিপূর্বে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থামিয়ে ইয়াবা তল্লাশি অভিযান চালানোর ধারাবাহিকতায় ইয়াবা পাচার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। বছর দুয়েক ধরে সড়ক পথে কোন যানবাহন তল্লাশি না থাকায় ইয়াবার রমরমা বাণিজ্যের আশাতিত উত্থান হয়েছে।
বালুখালী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের বয়োবৃদ্ধ শামশুল আলম জানায়, ইয়াবা আসক্ত হয়ে তার একটি মাত্র সন্তান পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে ভবঘুরে হয়ে গেছে। ইয়াবা আসক্ত ওই ছেলের অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে সমাজে মুখ দেখানো সম্ভব হচ্ছে না। বালুখালী হাতিরডেরা গ্রামের প্রবাসী নিয়ামত আলী জানায়, অনেক কষ্ট করে প্রবাস জীবন কাটিয়ে উপার্জিত টাকা দেশের বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। তবে ছেলে ওই সমস্ত টাকা ইয়াবার পেছনে শেষ করেছে। বর্তমানে ওই ছেলের নৈতিক জীবন নিয়ে পরিবার পরিজন গভীর উদ্বিগ্ন বলে সাংবাদিকদের জানান।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানায়, ইয়াবার কারণে পালংখালীর জনজীবনে অস্তিরতা বিরাজ করছে। তিনি বলেন, প্রশাসন ইচ্ছা করলে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। এ নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় ওই চেয়ারম্যান কড়া প্রতিবাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার  অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম ওসমান  জানান, ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পুলিশ তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।
আরো খবর.......

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নরসিংদীতে বজ্রপাতের পৃথক ঘটনায় মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু

মরণনেশা ইয়াবার জোয়ারে ভাসছে উখিয়ার যুব সমাজ

আপডেট টাইম : ১০:৪৮:১৮ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩
মিয়ানমারে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত ইয়াবার সিংহভাগ চালান উখিয়ার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে পাচারকারীদের মাধ্যমে এ দেশে পাচার হয়ে আসছে। পাচারকারীরা মিয়ানমার এলাকা থেকে ইয়াবা এনে উখিয়া উপজেলাসহ গ্রামগঞ্জে মজুদ পূর্বক সুযোগ বুঝে কৌশলে সারা দেশে পাচার করে আসছে। সীমান্তরক্ষী বিজিবির কড়া নজরদারি থাকা স্বত্বেও কিছু দালালরা রাতের আধাঁরে হাতবদল করে বিভিন্ন স্থানে পাচারের পাশাপাশি খোলামেলা বাজারজাত করছে।
সহজলভ্যে নাগালে পাওয়ার সুবাদে ইয়াবা আসক্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। নেশার টাকা যোগাড় করতে পিতা-মাতার অবাধ্য হয়ে সন্তানেরা নানা অপরাধ প্রবণতায় জড়িয়ে পড়ার ঘটনা নিয়ে পরিবার পরিজনেরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত জীবন নিয়ে শংকিত হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আন্তরিক না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন, সামাজিক জীবন ব্যবস্থার বেহাল পরিণতি হতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিন কুতুপালং রোহিঙ্গা বস্তি এলাকা ঘুরে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গার সাথে আলাপ করে জানা যায়, বস্তিতে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অনেকেই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন রোহিঙ্গা জানায়, যুবতী মহিলারা ইয়াবা বিক্রিতে সম্পৃক্ত হওয়ার সুবাদের যুব সমাজ মরণনেশা ইয়াবার প্রতি ঝুঁকেছে।
কুতুপালং এর বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল হক খান জানান, সন্ধ্যা নামার পরপরই দক্ষিণ কুতুপালং এলাকা ইয়াবার নগরীতে পরিণত হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে নামী দামী বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে আসা অচেনা, অজানা লোকজন ইয়াবা সেবন করছে আর ইয়াবার চালান নিয়ে অনায়াসে সটকে পড়ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ডিবি পুলিশ, হাইওয়ে, থানা পুলিশ ও বালুখালী কাস্টমস্ ইতিপূর্বে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থামিয়ে ইয়াবা তল্লাশি অভিযান চালানোর ধারাবাহিকতায় ইয়াবা পাচার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। বছর দুয়েক ধরে সড়ক পথে কোন যানবাহন তল্লাশি না থাকায় ইয়াবার রমরমা বাণিজ্যের আশাতিত উত্থান হয়েছে।
বালুখালী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের বয়োবৃদ্ধ শামশুল আলম জানায়, ইয়াবা আসক্ত হয়ে তার একটি মাত্র সন্তান পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে ভবঘুরে হয়ে গেছে। ইয়াবা আসক্ত ওই ছেলের অনৈতিক কর্মকান্ডের কারণে সমাজে মুখ দেখানো সম্ভব হচ্ছে না। বালুখালী হাতিরডেরা গ্রামের প্রবাসী নিয়ামত আলী জানায়, অনেক কষ্ট করে প্রবাস জীবন কাটিয়ে উপার্জিত টাকা দেশের বাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। তবে ছেলে ওই সমস্ত টাকা ইয়াবার পেছনে শেষ করেছে। বর্তমানে ওই ছেলের নৈতিক জীবন নিয়ে পরিবার পরিজন গভীর উদ্বিগ্ন বলে সাংবাদিকদের জানান।
পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানায়, ইয়াবার কারণে পালংখালীর জনজীবনে অস্তিরতা বিরাজ করছে। তিনি বলেন, প্রশাসন ইচ্ছা করলে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। এ নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় ওই চেয়ারম্যান কড়া প্রতিবাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
জানতে চাওয়া হলে উখিয়া থানার  অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম ওসমান  জানান, ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পুলিশ তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।