মোংলায় টিয়া ও ময়না পাখির পরে কাকও মানুষের মতো কথা বলে
- আপডেট টাইম : ০৭:৪৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩
- / ২৩১ ৫০০০.০ বার পাঠক
টিয়া, ময়না, তোতা পাখির পরে কাকও মানুষের মতো কথা বলে। টিয়া, ময়না ও তোতা পাখিকে মানুষ খাঁচায় বন্দি রেখে তাদের মানুষের মতো কথা শেখানো হলেও কাক কখনও মানুষের সুরে কথা বলে এমন ঘটনা বিরল। তবে অবিশ্বাস্য হলেও এবার কাক পোষা প্রাণীতে পরিণত হয়েছে বাগেরহাটের মোংলায় এমনই এক ঘটনার জন্ম দিয়ে সাড়া ফেলেছে একটি কাক পাখি। তারেক বিন সুলতান নামে এক যুবক বছর খানেক আগে আহত অবস্থায় একটি কাক পাখিকে বাসায় নিয়ে আসেন। সুস্থ হওয়ার পর সেই কাক বন্ধু হয়ে তারেকের বাসায় থেকে যায়।
জানা যায়, কালো কাক পাখি আলাদা আলাদা মানুষের মুখের আকৃতি মনে রাখতে পারে। এছাড়া অন্যান্য প্রাণীদের অনুকরণ করার পাশাপাশি কাক মানুষকে অনুকরণ করতেও পারে। কাক সাধারণত সারা জীবন একই সঙ্গীর সাথে থাকে। তবে খুব সহজে পোষ না মানা কাক পাখিই কিনা এবার মানুষের বন্ধু হয়ে গেলো।
মোংলা পৌর শহরের জয়বাংলা সড়কের বাসিন্দা মোঃ সুলতানের ছেলে তারেক বিন সুলতান প্রায় এক বছর আগে একটি কাকের বচ্চা পাখিকে তাদের গাছের নিচে দেখতে পান। সেটির কাছে গিয়ে তিনি দেখেন বাচ্চা কাক পাখিটি খুবই আহত অবস্থায় পড়ে আছে। এরপর বাসায় নিয়ে এসে চিকিৎসা দেন তিনি। প্রায় ১৫ দিনের মধ্যে পাখিটি সুস্থ হয়ে ওঠে।
তবে তারেক ভেবেছিলেন সুস্থ হওয়ার পর পাখিটি তার আপন ঠিকানায় ফিরে যাবে। কিন্তু ঘটনা ঘটলো উল্টো। পাখিটির সঙ্গে তারেকের ভাল বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যে কারণে প্রায় এক বছর হলেও কাক পাখিটি তারেককে ছেড়ে যায়নি।
তারেক বিন সুলতান এসব কথা জানিয়ে এই প্রতিবেদককে আরও বলেন, ‘মানবিক দায়িত্ব থেকে আহত কাক পাখিটিকে চিকিৎসা দেই। তবে বন্ধুত্বের ব্যাপারে ভাবিনি। কাক পাখিটি প্রায় এক বছর ধরে আমার সঙ্গেই আছে। আমি তাকে সিদ্ধ ডিম, মাছ ও মাংস খেতে দেই। সারাদিন আকাশে ঘুরে বেড়িয়ে ও আবার আমার বাসায় চলে আসে’।
কাক পাখির সঙ্গে তারেকের বন্ধুত্বের ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। ভিডিওতে দেখা যায় তারেকের মুখে কোন খাবার নিয়ে কাকটিকে খেতে দিলে সে তার মুখ থেকে সেই খাবারও খাচ্ছে। এমনকি তারেকে কোথাও গেলে কাক পাখিটি তাকে অনুসরণ করে।
তারেক বলেন, তিনি পাখিটিকে আটকে রাখতে চাননা। বরং উড়ে যাওয়ার জন্য পাখিটিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন তিনি। সে বিশ্বাস করেন স্বাধীনতার মধ্যে এই প্রকৃত বন্ধুত্ব খুঁজে পাওয়া যায়।
পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটন ও বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘যে কোন বন্যপ্রানীরা সবসময় তার নিরাপদ সেফটি এবং খাদ্য চায়। এটা যদি সঠিকভাবে করা হয় তাহলে তারা মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়’।