ঢাকা ১২:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

মহাম্মদপুর বাসী রাজাকারদের তালিকা চাই

মোঃ শফিকুল ইসলাম মহাম্মদপুর(মাগুরা) প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : ১০:৩৭:০৩ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১১৮ ৫০০০.০ বার পাঠক

বীরমুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে একসাথে ২০ রাজাকার হত্যার পর মাটি চাপা দেওয়া বীরত্বপূর্ণ ও সাহসিকতার নতুন ইতিহাস জানতে চান মহম্মদপুরবাসী !

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি ভবন নির্মাণের জন্য
(৪ঠা এপ্রিল)মাটি খোঁড়ার সময় পাওয়া গেছে
মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়। এরপরই আলোচনা শুরু হয় এই হাড়গোড় কাদের ?

মাননীয় জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি গণকবরের জায়গায় ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।

তিনি উপজেলা সদরের কয়েকজন বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলেন। তাঁরা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানান, এই হাড় ও খুলি রাজাকারদের

এ ছাড়া বীরমুক্তিযোদ্ধা ও বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ ১৪ জন সাক্ষরিত একটি রেজুলেশন করেন। রেজুলেশনে বলা হয়, এখানে তৎকালীন টিটিডিসি হলে (বর্তমানে উপজেলা পরিষদ অস্থায়ী মসজিদ) রাজাকারদের ঘাঁটি বা ক্যাম্প ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে জুন/ জুলাই মাসে এখানে হামলা চালিয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধারা ২০ জন রাজাকারকে গুলি করে হত্যা করেন। পরবর্তিতে স্থানীয় লোকজন রাজাকারদের লাশ ক্যাম্পের সাথেই মাটি চাপা দেন। উদ্ধার হওয়া হাড় ও মাথার খুলি সেইসব নিহত রাজাকারদের।

মুক্তিযুদ্ধে বিষয়টি অত্যন্ত বিরোচিত ও সাহসিকতার ইতিহাস কোনো সন্দেহ নেই। মহম্মদপুরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ “মহম্মদপুর যুদ্ধ” নামে পরিচিত। এই যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল ১৯ নভেম্বর ১৯৭১। বর্তমান উপজেলা পরিষদ ও তৎকালীন টিটিডিসি হলে অবস্থান নেওয়া রাজাকার বনাম উত্তরদিকে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের ৩/৪ টি দলের সাথে যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে শহীদ হন সহোদর আহম্মদ ও মহম্মদ। এই যুদ্ধে আরেকজন শহীদ হন যশোরের রুপদিয়ার বাসিন্দা ইপিআর সদস্য মহব্বত উল্লাহ। এছাড়া মহম্মদপুরে পৃথক যুদ্ধে শহীদ হন শহীদ আবীর হোসেন ও শহীদ মুকুল। নহাটার জয়রামপুরে আরেকটি বড় যুদ্ধের ঘটনা জানা যায়।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় মার্চে। মহম্মদপুরে ২০ জন রাজাকারকে গুলি করে হত্যা করা হয় জুন/ জুলাই মাসে। পাকিস্তান আর্মির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত শক্তিশালী রাজাকারদের ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ২০ জন রাজাকারদের গুলি করে হত্যা করে তাদের ডেঁরায় মাটি চাপা দেওয়া নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিরোচিত ও সাহসিকতার ইতিহাস।

স্বাধিনতার ৫০ বছর পর বীরমুক্তিযোদ্ধাদের এমন একটি বীরত্বপূর্ণ ঘটনা মহম্মদপুরবাসী তথা দেশবাসী জানতে পারছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়,যুদ্ধ চলার সময় অনেক জায়গায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা গণহত্যার শিকার হয়েছেন। এসব যুদ্ধস্পটে রয়েছে তাঁদের নাম খচিত স্মৃতিফলক ও ভাস্কর্য।

মহম্মদপুর উপজেলা সদরে একসাথে ২০ জন রাজাকারকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।

নিহত এই ২০ জন রাজাকার কারা মহম্মদপুরবাসী জানতে চায়। তাদের নাম পরিচয় সনাক্ত করে সংরক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করা হোক। এই যুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা / অপারেশনের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করা হোক। এই যুদ্ধে নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণকারী বীরমুক্তিযোদ্ধাদের পরিচিতি ও নাম ফলক প্রকাশ করা হোক।

রাজাকারের ক্যাম্পের উঠানে ২০ জন রাজাকার মেরে মাটি চাপা দেওয়ার মতো বিরোচিত প্রকৃত ইতিহাস জানানো সময়ের দাবি।

প্রয়োজনে রাজাকার সনাক্ত করতে ডিএনএসহ আধুনিক ব্যবস্থার সাহায্য নেওয়া হোক।

মাননীয় মাগুরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন, নিহত রাজাকারদের সনাক্ত করে তালিকা তৈরি ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হোক।

নতুন প্রজন্ম রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধীদের চরম পতন ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত বিজয়ের ইতিহাস জানুক প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মহাম্মদপুর বাসী রাজাকারদের তালিকা চাই

আপডেট টাইম : ১০:৩৭:০৩ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

বীরমুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে একসাথে ২০ রাজাকার হত্যার পর মাটি চাপা দেওয়া বীরত্বপূর্ণ ও সাহসিকতার নতুন ইতিহাস জানতে চান মহম্মদপুরবাসী !

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে একটি ভবন নির্মাণের জন্য
(৪ঠা এপ্রিল)মাটি খোঁড়ার সময় পাওয়া গেছে
মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়। এরপরই আলোচনা শুরু হয় এই হাড়গোড় কাদের ?

মাননীয় জেলা প্রশাসক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি গণকবরের জায়গায় ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।

তিনি উপজেলা সদরের কয়েকজন বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলেন। তাঁরা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানান, এই হাড় ও খুলি রাজাকারদের

এ ছাড়া বীরমুক্তিযোদ্ধা ও বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ ১৪ জন সাক্ষরিত একটি রেজুলেশন করেন। রেজুলেশনে বলা হয়, এখানে তৎকালীন টিটিডিসি হলে (বর্তমানে উপজেলা পরিষদ অস্থায়ী মসজিদ) রাজাকারদের ঘাঁটি বা ক্যাম্প ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে জুন/ জুলাই মাসে এখানে হামলা চালিয়ে বীরমুক্তিযোদ্ধারা ২০ জন রাজাকারকে গুলি করে হত্যা করেন। পরবর্তিতে স্থানীয় লোকজন রাজাকারদের লাশ ক্যাম্পের সাথেই মাটি চাপা দেন। উদ্ধার হওয়া হাড় ও মাথার খুলি সেইসব নিহত রাজাকারদের।

মুক্তিযুদ্ধে বিষয়টি অত্যন্ত বিরোচিত ও সাহসিকতার ইতিহাস কোনো সন্দেহ নেই। মহম্মদপুরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ “মহম্মদপুর যুদ্ধ” নামে পরিচিত। এই যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল ১৯ নভেম্বর ১৯৭১। বর্তমান উপজেলা পরিষদ ও তৎকালীন টিটিডিসি হলে অবস্থান নেওয়া রাজাকার বনাম উত্তরদিকে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের ৩/৪ টি দলের সাথে যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে শহীদ হন সহোদর আহম্মদ ও মহম্মদ। এই যুদ্ধে আরেকজন শহীদ হন যশোরের রুপদিয়ার বাসিন্দা ইপিআর সদস্য মহব্বত উল্লাহ। এছাড়া মহম্মদপুরে পৃথক যুদ্ধে শহীদ হন শহীদ আবীর হোসেন ও শহীদ মুকুল। নহাটার জয়রামপুরে আরেকটি বড় যুদ্ধের ঘটনা জানা যায়।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় মার্চে। মহম্মদপুরে ২০ জন রাজাকারকে গুলি করে হত্যা করা হয় জুন/ জুলাই মাসে। পাকিস্তান আর্মির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত শক্তিশালী রাজাকারদের ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ২০ জন রাজাকারদের গুলি করে হত্যা করে তাদের ডেঁরায় মাটি চাপা দেওয়া নিঃসন্দেহে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে বিরোচিত ও সাহসিকতার ইতিহাস।

স্বাধিনতার ৫০ বছর পর বীরমুক্তিযোদ্ধাদের এমন একটি বীরত্বপূর্ণ ঘটনা মহম্মদপুরবাসী তথা দেশবাসী জানতে পারছেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়,যুদ্ধ চলার সময় অনেক জায়গায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা গণহত্যার শিকার হয়েছেন। এসব যুদ্ধস্পটে রয়েছে তাঁদের নাম খচিত স্মৃতিফলক ও ভাস্কর্য।

মহম্মদপুর উপজেলা সদরে একসাথে ২০ জন রাজাকারকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা।

নিহত এই ২০ জন রাজাকার কারা মহম্মদপুরবাসী জানতে চায়। তাদের নাম পরিচয় সনাক্ত করে সংরক্ষণ ও লিপিবদ্ধ করা হোক। এই যুদ্ধের প্রকৃত ঘটনা / অপারেশনের বর্ণনা লিপিবদ্ধ করা হোক। এই যুদ্ধে নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণকারী বীরমুক্তিযোদ্ধাদের পরিচিতি ও নাম ফলক প্রকাশ করা হোক।

রাজাকারের ক্যাম্পের উঠানে ২০ জন রাজাকার মেরে মাটি চাপা দেওয়ার মতো বিরোচিত প্রকৃত ইতিহাস জানানো সময়ের দাবি।

প্রয়োজনে রাজাকার সনাক্ত করতে ডিএনএসহ আধুনিক ব্যবস্থার সাহায্য নেওয়া হোক।

মাননীয় মাগুরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন, নিহত রাজাকারদের সনাক্ত করে তালিকা তৈরি ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হোক।

নতুন প্রজন্ম রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধীদের চরম পতন ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত বিজয়ের ইতিহাস জানুক প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম।