রাবার ড্যাম: হাঁসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে খুলেছে সম্ভাবনার দাড়
- আপডেট টাইম : ০৭:১৩:০৫ পূর্বাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
- / ১৮৩ ৫০০০.০ বার পাঠক
রাবার ড্যাম: হাঁসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে খুলেছে সম্ভাবনার দাড়।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে দেউলবাড়ি ইউনিয়নে কর্নখালি খালের ওপর রাবার ড্যাম সাব-প্রজেক্ট নির্মাণের ফলে অনাবাদি জমিগুলো রূপান্তরিত হয়েছে আবাদিতে। সেচ সুবিধার আওতায় আসায় লাভবান হচ্ছে খালের দুই কুলের প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক।
এছাড়া কৃষি, মাছ চাষসহ এ প্রকল্পকে ঘিরে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটিয়েছে খুলছে সম্ভাবনার দ্বার। হয়েছে আরেকটি দর্শনীয় স্থান। শীতকালে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এসময়ে জমি চাষের জন্য পানির চাহিদা পুরন করা হয় ভু গর্ভে জমে থাকা পানি এবং বর্ষাকালে জমানো বৃষ্টির পানি থেকে। এ কারনে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর ভু গর্ভে জমে থাকা পানি বিভিন্ন নদীর চ্যানেল, লেক ও রিজার্ভারে সংরক্ষণের জন্য স্বল্প খরচে একটি প্রযুক্তি চালু করেছে। এই উদ্দেশ্যে ২০২২ সালে কর্নখালি খালের ওপরে পিরোজপুর বিএডিসির (ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প) আওতায় ৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২০ ফুট দীর্ঘ রাবার ড্যামটি বাস্তবায়ন হয়।
নাজিরপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ রাবার ড্যাম নির্মাণের ফলে উপজেলার দেউলবাড়ি ইউনিয়নের কর্নখালি গ্রামের ৭ কিলোমিটার বেরিবাধ এলাকার ৫ শতাধিক কৃষকের ২০০ হেক্টর জমি সেচ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। রাবার ড্যাম নির্মাণের পর গাওখালি, কর্নখালি, মধ্য গাওখালি, বটতলা, গ্রামের মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।
কর্নখালি গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের জমিগুলো উর্বর হওয়া সত্ত্বেও সেচের অভাবে ইতিপূর্বে অনাবাদি ছিলো। এ অঞ্চলের পানি লবণাক্ত থাকার কারণে বিগত দিনে ধান ফলানো যেতো না। রাবার ড্যাম নির্মাণ হওয়ায় বোরো ধান ও সবজি চাষ করে আমরা লাভবান হচ্ছি। কৃষিকার্যে চাহিদা অনুযায়ী নদী ও খাল থেকে পানি তুলে কৃষকেরা অনায়াসে জমিতে সেচ দিতে পারছেন। আগে এক বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ মণ ধান উৎপন্ন হতো। রাবার ড্যাম নির্মাণের ফলে সেচ সুবিধার কারণে এখন বিঘা প্রতি ৪৫ মণ থেকে ৫০ মণ ধান উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি অন্য আবাদেরও কাঙ্খিত ফলন হচ্ছে। একই কথা বললেন, কৃষক স্বপন, বাসুদেব রায়।
সরজমিনে দেখা গেছে, দেউলবাড়ি ইউনিয়নের উপর দিয়ে পুর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে বয়ে যাওয়া কর্নখালি খালের ওপর রাবার ড্যামটি নির্মিত হওয়ায় খালের পশ্চিম দিকে যত দূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি দেখা যায়। তাই সেচ ব্যবস্থার পাশাপাশি কর্নখালি খালে চলছে ছোট-বড় অনেক নৌকা। এসব নৌকা দিয়ে মানুষ এপার-ওপারে যাতায়াত করে। এবং ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ভাটিতে ড্যামের অল্প পানিতে মাছ ধরে, খেলা করে। এছাড়া রাবার ড্যামের ওপর রয়েছে একটি ফুট ব্রিজ ও পাশে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কংক্রিটের ঢালাই। ফলে এ রাবার ড্যাম প্রকল্প ঐ এলাকার চিত্রটিই বদলে দিয়েছে।
নাজিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঈশরাতুনেচ্ছা এশা বলেন, কর্নখালির রাবার ড্যাম সাব- প্রজেক্ট প্রকল্পটি শুধু কৃষকদের ভাগ্যই বদলায়নি। ঐ এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশেও ভারসাম্য এনেছে।