ছোট ভাইয়ের প্রকৃত খুনীদের খুঁজে বের করতে বড় বোনের সংবাদ সম্মেলন
- আপডেট টাইম : ১১:১২:২৭ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২২
- / ১৩০ ৫০০০.০ বার পাঠক
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতান পুর ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামের মোছাম্মৎ মিনা চৌধুরী ছোট ভাইয়ের প্রকৃত খুনীদের খুঁজে বের করতে, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বড় বোন মোছাম্মৎ মিনা চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
শনিবার ( ৪ ডিসেম্ভর) বিকেলে সিলেট বিভাগীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই নারী লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন,
লিখিত বক্তব্য পাঠে মোছাম্মৎ মিনা চৌধুরী বলেন ৪ বোন, ২ ভাই ও পিতা-মাতা নিয়ে আমাদের সাংসারিক জীবন। আমার বিয়ের পর স্বামীর সাথে স্থায়ী বসবাসের জন্য লন্ডন চলে যাই। আমাদের পরিবারের বড় মেয়ে হিসেবে আমার উপর দায়িত্ব একটু বেশি। নাড়ির টানে প্রায়ই আত্মীয়-স্বজনকে দেখতে দেশে আসি। সর্বশেষ গত দুই/তিন মাস আগে ভাই হারানোর শোকে বুক ভরা বেদনা নিয়ে আবার বাংলাদেশে আসি। আমাদের একমাত্র ছোট ভাই মাহবুব চৌধুরীর মৃত্যুর ঘটনায় আমার বৃদ্ধ পিতা এখন পাগল প্রায় এবং মৃত্যুর সঙ্গে। কারণ তার ধার্মিক ও পরহেজগার ছিল মাহবুব। হঠাৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া মাহবুরের ফ্যানের হকের সাথে মৃত মাহবুবের ছবি আয় বন্ধু-সহ পুরো বিশ্ববাসীকে হতবাক করে নিয়েছিল সেদিন, দিনটি ছিল রোববার ২৪/০১/২০১১ সময় বিকাল ০৩:১০ এবং ০৩ঃ১২ মিনিট।
আজ আমি আমার আপন ছোট ভাই কলিজার টুকরা মাহবুব কে হারানোর বেদনা নিয়ে এবং মাহবুরের মৃত্যুকে নিয়ে সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আপনাদের মাধ্যমে আইন ও পুলিশের আইজি মহোদাকে অনুরোধ করব সঠিক তদন্তের মাধ্যমে মাহবুবের খুনের ঘটনায় জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হোক।। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ফেইসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায় মাহবুকের নিথর দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে বিকাল ০৩ঃ১২ মিনিটে এবং শাহপরান থানা পুলিশের এসআই আকিকৃত সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ আছে যে, সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে আরেকজন পুলিশ সদস্যের সহায়তায় ফ্যানের হকের সাথে ঝুলন্ত মাহবুবকে নিচে নামানো হচ্ছে। এখন আপনারাই বিচার করেন মাহবুব আত্মহত্যা করেছে না কি তাকে ফিল্মি স্টাইলে হত্যা করে ফ্যানের হকের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, শাহপরান থানায় দাখিলকৃত মাহবুব চৌধুরীর অপমৃত্যু ব্যাপার এ সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে নিহত মাহবুব নাকি ৫/৬ মাস যাবত মানসিক বিকারগ্রস্ত (মানসিক রোগী) এবং তার চিকিৎসার জন্য আলাদা রাগী রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনরোগ বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক ডাকার মোঃ শফিউল ইসলাম খালেদ এর দ্বারা তাকে নিয়মিত চিকিৎসা করানো হয়েছে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো আমরা পরিবারের কেউই সে বিষয়ে জানি না। সে যদি মানসিক রোগী হত তাহলে অবশ্যই অপমৃত্যুর দরখাস্তের সাথে ফিরিঙ্গি হিসাবে তার চিকিৎসার প্রমাণ স্বরূপ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র দাখিল করা হয়। কিন্তু আমরা সেটা পাই নি।
করোনাকালীন সময়ে এই হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছিল এবং আমি তৎকালীন সময়ে লন্ডনে ছিলাম, ফ্লাইট ছিল না তাই শত চোয়া করেও আসতে পারি নি। সুদূর লন্ডন থেকে উদ্ধারকারী এস আই (শাহপরাণ থানা) বার বার ফোন করে বলেছি অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা করে দিন, আমার ভাইকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সেদিন পুলিশ আমার কথা রাখেন নি। দীর্ঘ ২২ মাস ৯ দিন পরে আপনাদের মাধ্যমে পুরো বিশ্ববাসীর কাছে আকুল আবেদন আর যেন কোন বোন এবং কোন পিতা এভাবে তার প্রিয়জনকে না হারায়। দুঃখের বিষয় হলো দীর্ঘ ২২ মাস পরও আমার ভাইয়ের মৃত্যু সনদ এখনও পাই নি। আজ অনুরোধ করব এভাবে আর কোন মায়ের কোল যেন খালি না হয়, কারণ যার হারায় সে বুঝে স্বজন হারানোর বেদনা কি জিনিস এবং এটা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বর্তমানে আমি এবং আমার পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতায় আছি। কারণ আমার ভাই আত্মহত্যা করে নি তাকে হত্যা করা হয়েছে কারণ সে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল এবং সে জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতানপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসাবে অংশগ্রহণ করতে চেয়েছিল কারণ তার প্রচুর জনপ্রিয়তা ছিল এবং এলাকার আইকন ছিল। মাহবুরের হত্যাকে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার চালানোর পরও সেদিন রাত ০৮ঃ৩০ এশার নামাজের পর জানাজার নামাজে হাজার হাজার মানুষের ঢল ছিল। মাহবুবকে হারিয়ে আজ আমরা জায়গা-জমি, বাসা-বাড়ি ও সহায় সম্পত্তি নিয়ে চরম নিত আছি। মাহবুরের বিচারের দাবীতে আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের আইজি ও সিআইডি পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আপনারা চাইলে মাহবুবের প্রকৃত খুনীদের খুঁজে বের করতে পারবেন এবং এটাই আমাদের দাবী ।