স্বতন্ত্র কারিকুলাম প্রনয়নের দাবীতে সিলেটে মানববন্ধন
- আপডেট টাইম : ০৫:০৩:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২
- / ১৬৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচী হিসেবে আজ সারাদেশে একযুগে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উক্ত কর্মসূচী অনুযায়ী বাদ জুহর ২ ঘঠিকার সময় সিলেট জেলা জমিয়াতুল মোদার্রেছিনের মানববন্ধন সিলেট জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ ছরওয়ারে জাহান এর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর কমিটির সভাপতি মাওলানা আবু সালেহ মোহাম্মদ কুতবুল আলম।এতে সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মাদরাসার প্রিন্সিপাল,ভাইস প্রিন্সিপাল, সুপার, সহ সুপার ওশিক্ষকবৃন্দ। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্নমহাসচিব বিশ্বনাথ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নোমান আহমদ,কানাইঘাট মনসুরিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আতাউর রহমান,
মাওলানা মুজুিবুর রহমান,অধ্যক্ষ,খরিল নেজামুল উলুম ফাযিল মাদরাসা,মাওলানা ছাদিকুর রহমান শিবলী
সেক্রেটারী, ওসমানীনগর উপজেলা শাখা,
মাওলানা সৈয়দ কুতবুল আলম
সাধারণ সম্পাদক,সিলেট মহানগর। মাওলানা ছাদিকুর রহমান শিবলী
সেক্রেটারী, ওসমানীনগর উপজেলা শাখা,রাখালগন্জ ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ শেহাব উদ্দিন,
জালালিয়া মহিলা আলিম মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ও
বিয়ানীবাজার উপজেলা সহ সভাপতি মাওলানা মোঃ কামাল হোসেন আল মাথহুরী, মাওলানা মোঃ আব্দুল্লাহিল বাকি, প্রিন্সিপাল – বিয়ানীবাজার কামিল মাদরাসা,ড. মাওলানা সৈয়দ শহীদ আহমদ বোগদাদী, অধ্যক্ষ, মাদারবাজার আলিম মাদরাসা, মাওলানা মো: আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী, সুপার, বোয়ালজুড় দাখিল মাদরাসা,
মাওঃ আবু সালেহ আল মাহমুদ
অধ্যক্ষ, চক বাজার আলিম মাদরাসা,
মাও: মো:মাশুক আহমদ সহ সভাপতি জকিগঞ্জ উপজেলা,
মাওঃমাহফুজুর রহমান সুপার হযরত শাহজালাল লতিফিয়া এতিমখানা মাদরাসা গোলাপ গনজ
মাওলানা এম এ সাবুর সভাপতি -গোলাপ গনজ উপজেলা
মাওঃ নুরুল হুদা অধ্যক্ষ আছির গনজ আলিম মাদ্রাসা।সহ সভাপতি গোলাপ গনজ উপজেলা, মাওলানা মোঃ আব্দুর রউফ, সুপার – রায়গড় পুরানবাজার দাখিল মাদরাসা,
মাওঃআরিফ বিল্লাহ, সুপার -মীরগঞ্জ দাখিল মাদ্রাসা
মাওঃসফিকুর রহমান, অধ্যক্ষ -হাজী আব্দুস সহীদ আলিম মাদ্রাসা।এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। বক্তারা তাদের বক্তব্যে ২০২৩ সালে স্কুল ও মাদরাসার একীভূত কারিকুলামে প্রণীত বইগুলোতে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয় গুলো প্রত্যাহারকরে ধর্মীয় মুল্যবোধ ও উচ্চ নৈতিকতা সম্পন্ন পাঠ্যাবলী প্রনয়নের জন্য দাবী জানান। বিশেষ করে মাদরাসা বোর্ডের জন্য স্বতন্ত্র কারিকুলাম প্রনয়নে মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত ও ইসলামি জ্ঞানে পারদর্শী ব্যক্তিবর্গ দ্বারা পুস্তক রচনা করে মাদরাসার স্বকীয়তা বজায় রাখার জোর দাবী জানানো হয়।
মানববন্ধন পরবর্তী নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গমন করে উনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ মাদরাসার জন্য স্বতন্ত্র শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নসহ ১৩ দফা দাবিতে বক্তব্য প্রদান করেন।
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বলেন, মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর অবদান এদেশের আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখ বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষকদের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কৃতজ্ঞতার সাথে আজীবন স্মরণে রাখবে। ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসকে স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) সনদের মান প্রদান, মাদরাসা শিক্ষকদের জনবল কাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণ, মাদরাসার ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, মাদরাসা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মাণ, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাতীয় দিবস ঘোষনাসহ বহুমুখী পদক্ষেপ ইসলামি শিক্ষার ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লেখা থাকবে। যুগের চাহিদা পূরণে রূপকল্প ৪১, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন, উন্নয়ন কিংবা যুগোপযোগী করা নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। শতকরা ৯১% মুসলমান যে দেশে বসবাস করে সে দেশে কুরআন সুন্নাহ, মুসলিম ঐতিহ্য-কৃষ্টি এবং দীর্ঘদিনের লালিত সংস্কৃতির সাথে সাথে বর্তমান চাহিদাকে সমন্বয় করে দেশ বরেণ্য আলেম ওলামাদের অংশগ্রহণে একটি যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক তৈরি হবে এটাই ছিল আমাদের প্রত্যাশা। বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নেতৃবৃন্দের সাথে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের বিশেষজ্ঞদের অনেক বৈঠকে ব্যাপক পর্যালোচনা হয়।
আলেম-ওলামাগণ বারবার একই দাবী করেন যে, মুসলিম জনগোষ্ঠির ইমান-আকিদা, শিক্ষা সংস্কৃতি সমুন্নত রেখে আধুনিক বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্তি ও মাদরাসা শিক্ষার বৈশিষ্ট্য উপযোগী করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক সংস্কার করতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০২২ইং সনের জন্য এনসিটিবি কর্তৃক ৬২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ষ্ঠ শ্রেণির স্কুলের জন্য যে ১০টি বই এবং মাদরাসার জন্য ধর্মশিক্ষা বাদ দিয়ে বাকী ০৯টি বই (বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, গণিত, শিল্প সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবন জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, বিজ্ঞান) পাইলটিং/পরীক্ষামূলকভাবে পাঠদান করা হয়েছে এবং ২০২৩ইং সাল থেকে ৬ষ্ঠ, ৭ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ঐ সমস্ত বই স্কুল ও মাদরাসায় বাধ্যতামূলকভাবে পড়াতে হবে মর্মে ঘঈঞই ঘোষণা দিয়েছে, সেগুলোর বহু বিষয় ইসলামী আদর্শ ও সংস্কৃতির সাথে সাংঘর্ষিক ও আপত্তিকর। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বর্ণিত পাঠ্যপুস্তক (জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০১০ এ বর্ণিত) মাদরাসা শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য উপেক্ষা করে রচিত হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে সন্নিবিশিত অধিকাংশ ছবি, চিত্র, শব্দ, বাক্য, তথ্য ও উপাত্ত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মর্মাহত এবং তাঁদের সন্তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে শঙ্কিত করে তুলবে। অধিদপ্তরসমূহ ইতোমধ্যে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শুরু করে দিয়েছে। সেখানে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ০৯টি বইয়ের মধ্যে কুরআন, সুন্নাহ’র কোনো বানী, কিংবা শিক্ষা, মুসলিম মনীষী, বিজ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিকদের বাণী ও উদ্ধৃতি, মুসলিম জীবনাচার ইত্যাদি কোন বিষয় স্থান পায়নি। উপরন্তু আপত্তিজনক বিষয় উপস্থাপিত হয়েছে।