সেবার মানে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বাঘা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
- আপডেট টাইম : ০৩:০৯:১১ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০২২
- / ২১৫ ৫০০০.০ বার পাঠক
রাজশাহীর বাঘায় রোগীদের আস্থার ঠিকানায় পরিণত হয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যার সরকারি এ হাসপাতালে এখন অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি সেবা দিচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যান্য পদে কর্মকর্তা-কর্মচারির সংখ্যাও এখন আগের তুলনায় বেশি। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশ করলেই মনে হবে যেন কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল।কোনো রোগী এলেই ছুটে আসছেন কর্তব্যরতরা। রোগীর ওষুধের সময় হলে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছেন সেবিকারা।
সরকারি এ হাসপাতালটিতে বর্তমানে বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগের রোগীদের অনেক ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। শুধু প্রসূতি মায়ের চিকিৎসাই নয়, স্বাভাবিক ডেলিভারি হচ্ছেই। তাই পার্শ্ববর্তী লালপুর, বাগাতিপাড়া উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের রোগীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসেবা গ্রহণ করে থাকেন প্রতিদিন। গড়ে ৩০০-৪০০ রোগী আউটডোরে চিকিৎসা ও ওষুধ গ্রহণ করছেন নিয়মিত। অপেক্ষমাণ রোগী ও স্বজনদের বসার জন্য রয়েছে আধুনিক আসন। যেকোনো রোগীর চিকিৎসায় দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে সেবা। রোগ নির্ণয়ে অধিকাংশ রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ২৪ ঘণ্টা ইসিজি, এক্স-রে, জিন এক্সপার্ট মেশিনে যক্ষ্মা নির্ণয় ও বিনামূল্যে চিকিৎসা। আরও রয়েছে দাঁতের ও চোখের আধুনিক চিকিৎসা সেবা। এখন শুধু ওটি চালুর অপক্ষো। তবে রোগী পরিবহণে রয়েছে ১টি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স।
নিরাপত্তা ও আধুনিকতায় এগিয়ে রয়েছে হাসপাতালটি। সৌন্দর্যবর্ধনে ফুলের বাগান ও বৈদ্যুতিক বাতিতে আলোকিত হাসপাতালটি সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে নিরাপত্তা। চিকিৎসা কাজে নিয়োজিতদের সঙ্গে সভা-সমাবেশের জন্য রয়েছে সুসজ্জিত আধুনিক হলরুম। এমন সেবায় সন্তুষ্ট রোগী ও এলাকার জনগণ। ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির পরিসংখ্যান বিভাগ সুত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ৩১ শয্যার বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৮ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ১০ জন জুনিয়র কনসালটেন্টসহ মুঞ্জুরিকৃত চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২৭জন। মিডওয়াফারি ৪জন সহ বর্তমানে কর্মরত নার্স রয়েছে ১৮ জন। ২/৪টি বাদে চিকিৎসক নার্সের সংখ্যা আগের তুলনায় এখন বেশি।
সরেজমিন দেখা গেছে, শয্যার অভাবে অনেক রোগীকে আন্তঃবিভাগের বারান্দায় বিছানা বিছিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা জানান, আসার পর সেবার ধরন দেখে তারা হতবাক! আগে জানতেন সরকারি হাসপাতালে সেবা নেই। এখন দেখেন তার উল্টো। রেহেনা বেগম নামের এক রোগী জানান, এখানে আসার পর তেমন কোন ওষুধ তাকে বাইরে থেকে কিনতে হয়নি। সময়মতো তারাই (নার্সরা) ওষুধ খাইয়ে দিচ্ছেন। রোগী আজিজুরের চাচা আব্দুল আওয়াল জানান,এমন পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ভালো সেবা পেলে মানুষ কখনো প্রাইভেট হাসপাতালে যাবে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আশাদুজ্জামান বলেন, চার মাস আসে আমি এখানে যোগদানের পর প্রধান ফলোক থেকে শুরু করে জরুরী বিভাগ আউটডোর বজ্র ব্যবস্থাপনা নির্মাণ ওগন টয়লেট স্থাপনা, জরুরী বিভাগ, ইনডোর-আউটডোর ও ক্যাবিন, ডায়াবেটিকস ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে আউটডোরে ও চিকিৎসা প্রদান, প্রেসারের ডায়াবেটিকস রোগীর জন্য এনসিডি কর্নার, জনসচেতনার জন্য এলসিডি মনিটর স্থাপনা, আবাসিক এলাকা পরিষ্কার করে আলোয় আলোকিত করা হয়েছে । আউটডোরে চিকিৎসা প্রদান করছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার । মা ও শিশুদের জন্য এ এন সি কর্নার। আগের তুলনায় বর্তমানে নরমাল ডেলিভারির হার অনেক বেশি। এছাড়াও নিজের অর্থায়নে আইপিএস ব্যবস্থা করেছি। চেষ্টা করছি প্রাইভেট হাসপাতালমুখী রোগীদের ফিরিয়ে আনতে। আধুনিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রূপান্তরের চেষ্টা করছি।পর্যাপ্ত জনবল থাকলে আমাদের সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে।