পটিয়া বহু পুরাতন একটি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের দাবি তে সংবাদ সম্মেলন
- আপডেট টাইম : ০৪:০৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল ২০২২
- / ১৮০ ৫০০০.০ বার পাঠক
মোঃ শহিদুল ইসলাম
বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান চট্রগ্রাম।।
১৭৮ বছরের পুরোনো পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, অভিভাবক, প্রাক্তণ ছাত্রসহ সচেতন নাগরিক সমাজ। সোমবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ বি এম আবু নোমান।লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৮৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দক্ষিণ চট্টগ্রামে বাংলা তথা ইংরেজি শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বিদ্যালয়টি।
পটিয়ায় প্রথম ডিগ্রি কলেজ (বর্তমানে পটিয়া সরকারি কলেজ) প্রতিষ্ঠার পেছনেও পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এবং কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য আড়াই একর জায়গাও দান করা হয় পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। পরবর্তীতে ১৯৭৮ সালে কলেজটি সরকারিকরণ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠেই (পটিয়া স্কুলের মাঠ খ্যাত) ১৮৪৩ সালে পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ১৯৭০ এবং ৭৩ সালে দু’বার পটিয়া স্কুলের মাঠে লক্ষাধিক লোকের জনসভায় বক্তব্য রেখেছিলেন। একইভাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ১৯৯৬ সালে এবং ২০১৮ সালের ২০ মার্চ ওই মাঠেই ভাষণ দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে এ ধরণের শতশত ঐতিহাসিক কার্যক্রমে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূমিকা তুলে ধরা হয়।
এ বিদ্যালয়ের সঙ্গে মধ্যযুগের পুঁথি গবেষক মুন্সি আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, জে এম সেন হলের প্রতিষ্ঠাতা যাত্রা মোহন সেন, প্রতিথযশা লেখক অধ্যাপক ড. আহমদ শরীফ, বাংলার মুসলমানদের মধ্যে গণিতে প্রথম ডক্টরেট আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গণিতবিদ ড. আতাউল হাকিম, আওয়ামী রাজনীতির দুঃসময়ের কাণ্ডারি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুসহ অসংখ্য গুণী ব্যক্তিত্বের স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় বিভিন্ন সরকারের আমলে অবহেলা, অবজ্ঞা ও বিমাতাসুলভ আচরণের শিকার হয়েছে। বিশেষত স্বাধীনতাত্তোর বিগত চল্লিশ বছরে প্রশাসনের তরফ থেকে কয়েকবার এ বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের উদ্যোগ নেয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত আবদুর রহমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে ১৯৮১ সালে সরকারিকরণ করা হয়।
এভাবে চার দশক অতিক্রান্ত হলেও স্কুলটি তার প্রাপ্য মর্যাদা ফিরে পায়নি। বিদ্যালয়ের পাশে ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ এস রাহাত আলী উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারিকরণের একটি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় বাদ দিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের উদ্যোগ ষড়যন্ত্রের অংশ বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। পটিয়াতে হাইস্কুল জাতীয়করণের কোন উদ্যোগ নেওয়া হলে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ই এর যোগ্য দাবিদার। শিক্ষার মান ও পরীক্ষার ফলাফলের দিক থেকেও আশেপাশের অন্য হাইস্কুলগুলো গত ১০ বছরে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ধারেকাছেও নেই বলে দাবি করা হয়।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. সৈয়দ সাইফুল ইসলাম, স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, বর্তমান প্রধান শিক্ষক সুনীল কুমার বড়ুয়া, প্রাক্তন ছাত্র আবুল কাশেম, পটিয়া পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আলমগীর আলম, স্কুল পরিচালনা সদস্য আহমদ কবির, আরফ আলী, নজরুল ইসলাম বিপ্লব, শিক্ষক প্রতিনিধি চন্দন কান্তি নাথ প্রমুখ।