সংবাদ শিরোনাম ::
নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য
সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
- আপডেট টাইম : ০৫:৪৭:৩৪ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২
- / ১৯৪ ৫০০০.০ বার পাঠক
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি।।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তীরনই নদীর অভয়াশ্রম সহ নদীর পানিতে গভীর রাতে বিষ প্রয়োগ করে সকল প্রজাতির মা মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে। এতে হুমকিতে জীববৈচিত্র্য।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) ভোরবেলা টের পেয়ে নদীর পাশের গ্রাম কবিরাজ পাড়ার লোকজন প্রতিবাদ করলে এবং ৯৯৯ ও ৩৩৩ কল দিলেও তারা কোন সুফল পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে অপরাধীরা বিভিন্ন ধরনের হুমকিও দিচ্ছে প্রতিবাকারীদের।
নদীতে বিষ প্রয়োগ করা কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বলে জানান এক গৃহবধু। গত শুক্রবার (২৫ মার্চ) গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর তীরনই নদীতে বিভিন্ন জাতের ১০০ কেজি মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে দেশি মা মাছ সংরক্ষণের জন্য অভয়াশ্রম তৈরি করা হয়।
এসব অভয়াশ্রম এখন কাজী গরুর মতো ‘কাগজে আছে গোয়ালে নেই’ বলে অনেকে মনে করছেন।
রোববার (২৭ মার্চ) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের অভয়াশ্রমের দক্ষিণ পাশে নদীর পানির গতিরোধ করে পানি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরে জমে থাকা পুরো পানিতে বিষ প্রয়োগ করে মা মাছ শিকার করে নিয়েছেন অপরাধীরা।
ঘটনার দুদিন পরেও নদীর ধারে মরা মাছ ভেসে বেড়াচ্ছে। চলাচল বন্ধ রাখা পানিতে জীবন্ত কোন মাছ লক্ষ্য করা যায়নি। শুধু তাই নয় মরে গেছে নদীর পানিতে সব জলজ প্রাণী।
নদীর পাশের বাসিন্দা পারুল আক্তার জানান, গভীর রাতে ঐ এলাকার প্রভাবশালী সফিকুল, দুলাল, তালেবুল ও সোহেল রানাসহ বেশ কয়েকজন তরল বিষসহ গ্যাস ট্যাবলেট দিয়ে পুরো পানি বিষাক্ত করে দিয়ে মাছ ধরেছে। এতে নদীর পানিতে অভয়াশ্রম থেকে ভেসে আসা বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ মরে পানিতে ভেসে উঠে। গভীর রাতেই তারা প্রায় ২০ মণের বেশি মাছ নিয়ে চলে যায়। এতে সরকারি হট লাইন ৯৯৯ ও ৩৩৩-এ কল করেও কোনো লাভ হয়নি।
তিনি আরো জানান, পরেদিন সকালে পুনরায় তারা মাছ তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি সহ কয়েকজন বাধা দিলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। আজ রোববার সাংবাদিকরা আসার কথা শুনেও আমাকে গালিগালাজ করছে।
ঐএলাকার জেলে আবুল কালাম জানান, আমি সহ এই এলাকার ৩০টি পরিবার মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করি। বাড়ির পাশে নদীর নিচু তীরে বারোমাস মাছ পাওয়া যায়। কিন্ত বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের কারণে বর্ষার মৌসুম পর্যন্ত আমাদের
প্রচন্ড অভাবের মধ্যে থাকতে হবে। বিষ প্রয়োগের কারণে সব মাছ মরে গেছে।
নদীর ধারে উপস্থিত অভিযুক্ত সোহেল ও সফিকুলের নিকট জানতে চাইলে জানান, জাল দিয়ে মাছ শিকার করেছেন তারা। বিষ প্রয়োগ করেননি। মাছ মরে পানিতে ভাসছে কেনো? এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়েই চলে যান তারা।
এ ব্যপারে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের কে বলেন, আমি বিষ প্রয়োগে মাছ সহ জলজ প্রাণী নিধনের খবর শুনেছি। এখন ঐ এলাকায় যাব। তারপরে বিস্তারিত বলতে পারব।যদি তারা এটি করে থাকে তাহলে মৎস্য অপরাধ আইনে তাদের বিচার হবে।
আরো খবর.......