আ’লীগ সরকারের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না- মির্জা ফখরুল,
- আপডেট টাইম : ১২:১৭:০২ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
- / ১৬৭ ৫০০০.০ বার পাঠক
ঠাকুরগাঁও সদর প্রতিনিধি:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই দেশে আ’লীগ সরকারের অধীনে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। ৭৩ সালে আ’লীগ একটা নির্বাচন করেছিল ঐ নির্বাচনেও একই অবস্থা ছিল। ২০১৪ সালের যে নির্বাচন হয়েছিল সেখানে ৯ জন গুলিবৃদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিল।
সেখানে এক কর্মীর হাত কেটে নেওয়া হয়েছিল। মানুষজনের নামে প্রায় ৭শ মামলা দেওয়া হয়েছে। সেখানে সাড়ে ৭ হাজার নেতা কর্মীর নাম রয়েছে। তিনি ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার শহরের সাধারণ পাঠাগার চত্বরে সদর উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার মামলা দিয়েও কাউকে এতটুকুও দমাতে পারেননি। বর্তমান সময়টা খুব খারাপ, এতটা খারাপ যে, ঠাকুরগাঁও এক সময় শান্তির নিবাস ছিল। মামলা মোকদ্দমা কখনও আমরা দেখিনি। কিন্তু নেতা কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় ওই সময় সবাইকে খুবই কষ্ট, যন্ত্রনা ব্যাথা সহ্য করতে হয়েছে। প্রত্যেকটার হিসাব পাই পাই করে নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোটি মানুষকে টিসিবির কার্ড দেওয়া হয়েছে ।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আ’লীগের সভানেত্রীকে দেওয়া হয়েছে দুস্থ কার্ড, কিন্তু দিনমজুর কার্ড পায়নি। যারা পায় উল্টা তাদের টাকা দিতে হয় আ’লীগের লোকজনকে। চিন্তা করা যায় না একটা সভ্য দেশে এভাবে চুরি, ডাকাতি করা হয়। এটা পুরোপুরি একটা ডাকাতের সরকার।
এর আগেও তারা এই কাজগুলো করেছিল। এই দলের নাম দেওয়া উচিত লুটপাটের দল। তিনি আরও বলেন, দেশের অবস্থা খুব খারাপ। দেশনেত্রী, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করবেন। কখন তিনি মুক্ত হবেন। তিনি ব্যাভিলনের বাশিওয়ালা। তাকে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে বেই আইনীভাবে সম্পুর্ন সাজানো মামলা দিয়ে আটক করেছে। একই ভাবে তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে।
এখন মৃত মানুষের নামেও মামলা হয়। অর্থনীিিততে তারা শেষ করে দিয়েছে। উন্নয়নের রোল মডেল, মধ্যয় আয়ের দেশের কথা বলা হলেও সত্যিকারে আজকে দারিদ্রের সংখ্যা বাড়ছে কেন? গরীব মানুষের সংখ্যা বাড়ছে কেন, কৃষক তার ফসলের ন্যার্য্য মূূল্য পান না কেন। আপনারা বলেছিলেন বিনামূল্যে সার দিবেন কিন্তু ইউরিয়া স্যারের দাম ১২শত টাকা। বর্তমানে ২০ লাখ টাকা না দিলে চাকুরী হয় না।
লড়াইও করেছি অনেক, ক্ষতিও হয়েছে অনেক। কিন্তু আমরা দমে যাইনি। আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে গণতন্ত্রের মুক্তি আনবো।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি বলেন, ঠাকুরগাঁওবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। যে তারা আমাকে কাউন্সিলে এনেছেন।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমার বাবাকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে গিয়ে আমাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন। তাদের উৎসাহের কারনে আজ আমি এ জায়গায় এসে দাড়িয়েছি। বাংলাদেশ খুব ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, মেঘের ঘনঘটা চারিদিকে। যখন বিএনপি ভাল থাকে তখন পুরো দেশ ভাল থাকে। যখন বিএনপি খারাপ থাকে তখন পুরো দেশ খারাপ থাকে। আ’লীগ বলে বিএনপি নাকি দেখা যায় না।
আমি তাদের বলবো আপনারা ঠাকুরগাঁওয়ে আসেন, এই ছোট শহরে আমার ভাইদের জমায়েত দেখেন এখানে শুধুমাত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে, দেশনায়ক তারেক রহমানের নামে, বিএনপির নামে তারা এসেছে। আমরা আ’লীগকে কোথাও দেখিনা। আমরা দেখি পুলিশ, আমরা দেখি প্রশাসন। তারা যখন বলে আমরা আন্দোলন করতে পারি না। আমরা বলি আপনি বন্দুকের নল সরান তারপর দেখেন আমরা আন্দোলন করতে পারি কিনা?
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির আয়োজনে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন, জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান। পরে সদর উপজেলা বিএনপির ভারপাপ্ত সভাপতি এ. এন. এম. রোকন উদ্দিন ভুইয়ার সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন, প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান জাহিদ, প্রধান বক্তা জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক পয়গাম আলী প্রমুখ।
এ সময় জেলা, সদও উপজেলা, পৌর বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আব্দুল হামিদ। আগামী ৯ এপ্রিল ভোটের মাধ্যমে সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।