ঢাকা ০৫:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম ::
ঠাকুরগাঁওয়ে নাগরিক প্লাটফর্মের ত্রৈমাসিক সভা ও জেলা কমিটি পুনর্গঠন মানুষের তৈরি মতবাদ আল্লাহর আইনের সাথে চ্যালেঞ্জ করার শামিল – ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগ নেতার দখলের চেষ্টা।এই বিষয়ে সময়ের কন্ঠস্বরে নিউজ প্রকাশের পর এসিল্যান্ডের নিষেধাজ্ঞা ফার্মেসী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সমগ্র বাংলাদেশ) পাকুন্দিয়া উপজেলা শাখা কমিটির সকলকে সনদ প্রদান ও আলোচনা সভা ২৫২ বছরের ইতিহাসে চট্টগ্রামে এই প্রথম নারী ডিসি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের পদায়ন ফরিদা খানম গাজীপুর জেলা মহানগর কাশিমপুরে স্বাধীন মত প্রকাশের জেরে থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার গন্জেরহাটি গ্রামের সরকারি রাস্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রনব বনিকের দখলের চেষ্টা নরসিংদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে আহত সাংবাদিকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চট্টগ্রামে জনতা ব্যাংক সিবিএ নেতা আফসার আ.লীগের আমলে দাপট দেখিয়ে এখন বিএনপি নিয়োগ, বদলি, চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন টাকা মহারাষ্ট্রে ভূমিধস জয়ের পথে বিজেপি জোট, ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’

নওগাঁয় সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের বলিহার রাজবাড়ি

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ১১:২৩:২৯ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
  • / ২১০ ৫০০০.০ বার পাঠক

শাহাদুল ইসলাম (বাবু) নওগাঁ প্রতিনিধি।।

নওগাঁয় বলিহার রাজবাড়ি, যোগীর ঘোপা, কালীর থান, ধাপের ডিবি। এগুলো নওগাঁর চারটি উল্লেখযোগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের নাম, সম্প্রতি যা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষণের তালিকায়।

ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক নিদর্শন ছড়িয়ে আছে নওগাঁ জেলায়। এর মধ্যে এই চারটি পুরাকীর্তি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সংরক্ষণের জন্য।

এরই মধ্যে এর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। পর্যায়ক্রমে জেলার উল্লেখযোগ্য ইতিহাসসমৃদ্ধ স্থানগুলো সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আর অধিদপ্তর ও নওগাঁ জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার ইতিহাসপ্রেমীরা।

নওগাঁ জেলায় বর্তমানে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত পাহাড়পুর (সোমপুর) বৌদ্ধ বিহার, কুসুম্বা মসজিদ, জগদ্দল বিহার, আগ্রাদিগুন ডিপি (অগ্রপুরী বিহার), দিবর দীঘি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত পতিসর কাছারিবাড়ি, ভীমের পান্টি, হলুদ বিহারসহ ১৪টি পুরাকীর্তি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষণের আওতায় রয়েছে।

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বলিহার রাজবাড়ি বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে যোগাযোগ হয়। এর ধারাবাহিকতায়ই যথাযথ প্রক্রিয়া অনুযায়ী ১৯৬৮ সালের পুরাকীর্তি আইন অনুসারে প্রত্নস্থানটি সংরক্ষণের জন্য সুপারিশ করা হয়।

আঞ্চলিক ইতিহাস থেকে জানা যায়, মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে সুবাদারের মাধ্যমে জায়গির পেয়ে বলিহার জমিদার পরিবার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নৃসিংহ চক্রবর্তী। বলিহার জমিদাররা তাঁদের জমিদারির বিভিন্ন স্থানে নানা স্থাপনা গড়ে তোলেন, যার মধ্যে বলিহার রাজবাড়ি একটি। এ বংশের জমিদার রাজেন্দ্রনাথ ১৮২৩ সালে বলিহারে রাজ-রাজেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মন্দিরে দেবীর দৃষ্টিনন্দন পিতলের মূর্তি স্থাপন করেন।

বলিহারের ৯ চাকার রথ পুরো অঞ্চলে প্রসিদ্ধ ছিল। বলিহারের রাজাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। রাজা কৃষ্ণেন্দ্র নাথ রায় বাহাদুর ছিলেন একজন লেখক। দেশ বিভাগের সময় বলিহারের রাজা ছিলেন বিমলেন্দু রায়। দেশ বিভাগের কিছু সময় পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে রাজা বিমলেন্দু রায় পরিবার নিয়ে ভারতে চলে যান। এর পর থেকে বলিহার রাজবাড়ি দেখভাল করতেন রাজবাড়ির কর্মচারীরা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে রাজবাড়ির বিভিন্ন নিদর্শন, আসবাব, দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুট হয়ে যায়। এরপর বেশ কিছুদিন রাজবাড়ির একটি ভবন বলিহার স্কুলের শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। নতুন ভবন নির্মিত হওয়ার পর স্কুলটি সেখানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পর থেকে রাজবাড়িটি কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

শুধু রাজবাড়ি চত্বরে অবস্থিত মন্দিরে স্থানীয়ভাবে পূজাঅর্চনা করা হয়। এখনো টিকে থাকা রাজবাড়ির স্থাপনাগুলোর মধ্যে আছে সামনের প্রকাণ্ড তোরণ, ভেতরের চত্বরের প্রাচীন নাট মন্দির, রাজরাজেশ্বরী মন্দির, জোড়া শিব মন্দির আর বিশাল তিনতলাবিশিষ্ট প্রাসাদ।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নওগাঁয় সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের বলিহার রাজবাড়ি

আপডেট টাইম : ১১:২৩:২৯ পূর্বাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২

শাহাদুল ইসলাম (বাবু) নওগাঁ প্রতিনিধি।।

নওগাঁয় বলিহার রাজবাড়ি, যোগীর ঘোপা, কালীর থান, ধাপের ডিবি। এগুলো নওগাঁর চারটি উল্লেখযোগ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের নাম, সম্প্রতি যা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষণের তালিকায়।

ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক নিদর্শন ছড়িয়ে আছে নওগাঁ জেলায়। এর মধ্যে এই চারটি পুরাকীর্তি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সংরক্ষণের জন্য।

এরই মধ্যে এর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। পর্যায়ক্রমে জেলার উল্লেখযোগ্য ইতিহাসসমৃদ্ধ স্থানগুলো সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আর অধিদপ্তর ও নওগাঁ জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলার ইতিহাসপ্রেমীরা।

নওগাঁ জেলায় বর্তমানে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত পাহাড়পুর (সোমপুর) বৌদ্ধ বিহার, কুসুম্বা মসজিদ, জগদ্দল বিহার, আগ্রাদিগুন ডিপি (অগ্রপুরী বিহার), দিবর দীঘি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত পতিসর কাছারিবাড়ি, ভীমের পান্টি, হলুদ বিহারসহ ১৪টি পুরাকীর্তি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষণের আওতায় রয়েছে।

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বলিহার রাজবাড়ি বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে যোগাযোগ হয়। এর ধারাবাহিকতায়ই যথাযথ প্রক্রিয়া অনুযায়ী ১৯৬৮ সালের পুরাকীর্তি আইন অনুসারে প্রত্নস্থানটি সংরক্ষণের জন্য সুপারিশ করা হয়।

আঞ্চলিক ইতিহাস থেকে জানা যায়, মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে সুবাদারের মাধ্যমে জায়গির পেয়ে বলিহার জমিদার পরিবার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নৃসিংহ চক্রবর্তী। বলিহার জমিদাররা তাঁদের জমিদারির বিভিন্ন স্থানে নানা স্থাপনা গড়ে তোলেন, যার মধ্যে বলিহার রাজবাড়ি একটি। এ বংশের জমিদার রাজেন্দ্রনাথ ১৮২৩ সালে বলিহারে রাজ-রাজেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মন্দিরে দেবীর দৃষ্টিনন্দন পিতলের মূর্তি স্থাপন করেন।

বলিহারের ৯ চাকার রথ পুরো অঞ্চলে প্রসিদ্ধ ছিল। বলিহারের রাজাদের মধ্যে অনেকেই উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। রাজা কৃষ্ণেন্দ্র নাথ রায় বাহাদুর ছিলেন একজন লেখক। দেশ বিভাগের সময় বলিহারের রাজা ছিলেন বিমলেন্দু রায়। দেশ বিভাগের কিছু সময় পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে রাজা বিমলেন্দু রায় পরিবার নিয়ে ভারতে চলে যান। এর পর থেকে বলিহার রাজবাড়ি দেখভাল করতেন রাজবাড়ির কর্মচারীরা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তী সময়ে রাজবাড়ির বিভিন্ন নিদর্শন, আসবাব, দরজা-জানালাসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুট হয়ে যায়। এরপর বেশ কিছুদিন রাজবাড়ির একটি ভবন বলিহার স্কুলের শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। নতুন ভবন নির্মিত হওয়ার পর স্কুলটি সেখানে সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পর থেকে রাজবাড়িটি কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।

শুধু রাজবাড়ি চত্বরে অবস্থিত মন্দিরে স্থানীয়ভাবে পূজাঅর্চনা করা হয়। এখনো টিকে থাকা রাজবাড়ির স্থাপনাগুলোর মধ্যে আছে সামনের প্রকাণ্ড তোরণ, ভেতরের চত্বরের প্রাচীন নাট মন্দির, রাজরাজেশ্বরী মন্দির, জোড়া শিব মন্দির আর বিশাল তিনতলাবিশিষ্ট প্রাসাদ।