ঢাকা ০৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম ::
বেড়েছে তেল, চাল ও পেঁয়াজের দাম, কমেছে মুরগির চেকপোস্ট ব্যারাক থেকে পুলিশ সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে হামলা চালানোর ইসরাইলি পরিকল্পনা ফাঁস ঠাকুরগাঁওয়ে বিনা উদ্ভাবিত জাত সমূহের সম্প্রসারণ এবং শস্যবিন্যাসে অন্তর্ভুক্তিকরণ শীর্ষক কর্মশালা ভৈরবে বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শোনে, অসুস্থ হয়ে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু মা আমেনা বালিকা কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের বছরের প্রথম সবক প্রদান করা হয়েছে শুক্রবার ১৪ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না ঢাকার যেসব এলাকায় বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ১১ বছরের এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ করে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্ব খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, জানালেন জামায়াত আমির

বরগুনাগামী অভিযান ১০ লঞ্চে আগুন: অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন পাথরঘাটা উপজেলার ইউএনও

সময়ের কন্ঠ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : ০৭:১৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ২৮৬ ৫০০০.০ বার পাঠক

নুরুল আমিন মিল্টন মল্লিক (নিজস্ব প্রতিবেদক।।

পাথরঘাটা ইউএনও বলেন, ‘লঞ্চে থাকা বৃদ্ধ এবং শিশুরাই বেশি হতাহত হয়েছেন। এ ছাড়া লঞ্চে অনেক নারী ছিলেন যারা নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন, কিন্তু তীরে উঠতে পেরেছেন কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।’

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ।

তিনি লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের নীলগিরির যাত্রী ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লঞ্চ থেকে লাফিয়ে বাঁচায় সময় তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে গেছে।

বর্তমানে তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ইউএনও হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ জানান, ঢাকা থেকে অফিসিয়াল কাজ সেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় তারা লঞ্চে বরগুনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাত ৩টার দিকে লঞ্চে অন্য যাত্রীদের চিৎকারে তার ঘুম ভাঙে। তখন তিনি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যান। এরপর তড়িঘড়ি করে রুম থেকে বের হয়ে লঞ্চের সামনে থেকে চলে যান। সেখানে কয়েক শ লোকের ভিড় ছিল।

এ সময় লঞ্চটি সুগন্ধা নদীর মাঝখানে অবস্থান করছিল। অনেককেই নদীতে লাফিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন লঞ্চ থেকে তারাও লাফ দিলে তৃতীয় তলা থেকে দোতলায় পড়ে যান। তখন তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

ইউএনও বলেন, ‘লঞ্চে থাকা বৃদ্ধ এবং শিশুরাই বেশি হতাহত হয়েছেন। এ ছাড়া লঞ্চে অনেক নারী ছিলেন যারা নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন, কিন্তু তীরে উঠতে পেরেছেন কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।

 

 

 

কেবিন বয় ইয়াসিন বলেন, ‘লঞ্চের নিচতলার পেছনে ইঞ্জিন রুমের পাশেই ক্যানটিন। সেখানে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিনরুমে। সেখানে ১৩ ব্যারেল ডিজেল রাখা ছিল। ডিজেল আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়।’

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ইঞ্জিনরুমের পাশের ক্যানটিনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে পুরো লঞ্চে আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছেন কেবিন বয় ইয়াসিন।

তিনি দৈনিক সময়েরকন্ঠকে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।

ইয়াসিন বলেন, ‘লঞ্চের নিচতলার পেছনে ইঞ্জিনরুমের পাশেই ক্যানটিন। সেখানে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিনরুমে। সেখানে ১৩ ব্যারেল ডিজেল রাখা ছিল। ডিজেল আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়।

‘ইঞ্জিনরুমের পর আগুন চলে যায় ডেকের দিকে। ডেকের জানালার পর্দা থেকে দোতলায়। সেখানে প্রথমে পারটেক্স বোর্ডের সিলিংয়ে আগুন লাগে। দোতলায় একটা চায়ের দোকান ছিল। ওই চায়ের দোকানের সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়ে আগুন আরও বড় হয়ে যায়। এরপর আগুন যায় তিন তলায়।’

লঞ্চের কেবিন বয় জানান, আগুন লাগার পর ডেকের যাত্রীরা নেভানোর চেষ্টা করেন। অনেকে ছাদে চলে যান। কেউ কেউ নদীতে লাফ দেন।

ঝালকাঠির পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে আগুন লাগে।

মাঝনদীতে আগুন লেগে যায় এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া দৈনিক সময়ের কন্ঠকে জানান, এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হক জানান, শতাধিক দগ্ধ যাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বরিশাল মেডিক্যালের সি‌নিয়র স্টাফ নার্স মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দগ্ধ আট শিশুসহ শতাধিক ঝালকাঠী সদর হাসপাতাল সহ বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথ‌মিক চি‌কিৎসা নি‌য়ে এসে‌ছেন।

আরো খবর.......

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বরগুনাগামী অভিযান ১০ লঞ্চে আগুন: অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন পাথরঘাটা উপজেলার ইউএনও

আপডেট টাইম : ০৭:১৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২১

নুরুল আমিন মিল্টন মল্লিক (নিজস্ব প্রতিবেদক।।

পাথরঘাটা ইউএনও বলেন, ‘লঞ্চে থাকা বৃদ্ধ এবং শিশুরাই বেশি হতাহত হয়েছেন। এ ছাড়া লঞ্চে অনেক নারী ছিলেন যারা নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন, কিন্তু তীরে উঠতে পেরেছেন কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।’

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ।

তিনি লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের নীলগিরির যাত্রী ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় লঞ্চ থেকে লাফিয়ে বাঁচায় সময় তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে গেছে।

বর্তমানে তারা ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ইউএনও হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ জানান, ঢাকা থেকে অফিসিয়াল কাজ সেরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় তারা লঞ্চে বরগুনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাত ৩টার দিকে লঞ্চে অন্য যাত্রীদের চিৎকারে তার ঘুম ভাঙে। তখন তিনি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যান। এরপর তড়িঘড়ি করে রুম থেকে বের হয়ে লঞ্চের সামনে থেকে চলে যান। সেখানে কয়েক শ লোকের ভিড় ছিল।

এ সময় লঞ্চটি সুগন্ধা নদীর মাঝখানে অবস্থান করছিল। অনেককেই নদীতে লাফিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করতে দেখা গেছে বলে জানান তিনি। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন লঞ্চ থেকে তারাও লাফ দিলে তৃতীয় তলা থেকে দোতলায় পড়ে যান। তখন তার স্ত্রী উম্মুল ওয়ারার ডান পা ভেঙে যায়। এরপর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

ইউএনও বলেন, ‘লঞ্চে থাকা বৃদ্ধ এবং শিশুরাই বেশি হতাহত হয়েছেন। এ ছাড়া লঞ্চে অনেক নারী ছিলেন যারা নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন, কিন্তু তীরে উঠতে পেরেছেন কি না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে।

 

 

 

কেবিন বয় ইয়াসিন বলেন, ‘লঞ্চের নিচতলার পেছনে ইঞ্জিন রুমের পাশেই ক্যানটিন। সেখানে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিনরুমে। সেখানে ১৩ ব্যারেল ডিজেল রাখা ছিল। ডিজেল আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়।’

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ইঞ্জিনরুমের পাশের ক্যানটিনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে পুরো লঞ্চে আগুন লেগেছে বলে জানিয়েছেন কেবিন বয় ইয়াসিন।

তিনি দৈনিক সময়েরকন্ঠকে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।

ইয়াসিন বলেন, ‘লঞ্চের নিচতলার পেছনে ইঞ্জিনরুমের পাশেই ক্যানটিন। সেখানে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিনরুমে। সেখানে ১৩ ব্যারেল ডিজেল রাখা ছিল। ডিজেল আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়।

‘ইঞ্জিনরুমের পর আগুন চলে যায় ডেকের দিকে। ডেকের জানালার পর্দা থেকে দোতলায়। সেখানে প্রথমে পারটেক্স বোর্ডের সিলিংয়ে আগুন লাগে। দোতলায় একটা চায়ের দোকান ছিল। ওই চায়ের দোকানের সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়ে আগুন আরও বড় হয়ে যায়। এরপর আগুন যায় তিন তলায়।’

লঞ্চের কেবিন বয় জানান, আগুন লাগার পর ডেকের যাত্রীরা নেভানোর চেষ্টা করেন। অনেকে ছাদে চলে যান। কেউ কেউ নদীতে লাফ দেন।

ঝালকাঠির পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে আগুন লাগে।

মাঝনদীতে আগুন লেগে যায় এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া দৈনিক সময়ের কন্ঠকে জানান, এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।

ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইনুল হক জানান, শতাধিক দগ্ধ যাত্রীকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল ও বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বরিশাল মেডিক্যালের সি‌নিয়র স্টাফ নার্স মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দগ্ধ আট শিশুসহ শতাধিক ঝালকাঠী সদর হাসপাতাল সহ বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথ‌মিক চি‌কিৎসা নি‌য়ে এসে‌ছেন।