গাজীপুরে কাশিমপুর সুরাবাড়ি পরকীয় ও জমি সংক্রান্ত জেরে ঝুট ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যার ছয় বছর পর হত্যা কাণ্ডের রহস্য মামলা আসামী গ্রেফতার
- আপডেট টাইম : ০২:৩৩:১৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১
- / ৩২২ ৫০০০.০ বার পাঠক
মানসুরা আক্তার কাকলী স্টাফ রিপোর্ট।।
গাজীপুরের কাশিমপুরের গার্মেন্টসে করর্মী আরিফ হত্যা মামলা আসামী গ্রেফতার ও মামলার রহস্য
উদ্ঘাটন করল পিবিআই, গাজীপুর।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন এর কাশিমপুর থানার সুরাবাড়ী এলাকার বহুল আলোচিত মোঃ আরিফুল ইসলাম আরিফ হত্যা
মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামী গ্রেফতার করলো
মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী ১। মোঃ সাইদুর রহমান শাহীন সরকার (৫৮), পিতা-মৃত মজিবুর
রহমান সাং-সুরাবাড়ী, থানা-কাশিমপুর, জিএমপি, গাজীপুরকে ইং ২২ নভেম্বর
আসামী ২। মোঃ মোমিরুল দেওয়ান (৪৮), পিতা-দেওয়ান মোঃ জহিরুল ইসলাম, সাং-সুরাবাড়ী, থানাকাশিমপুর, জিএমপি, আসামী ৩। মোঃ
শরীফ দেওয়ান (৩৩), পিতা-মোঃ হাশেম দেওয়ান, সাং-সুরাবাড়ী, থানা-কাশিমপুর, জিএমপি, গাজীপুরকে ইং ২২
নভেম্বর ২০২১ তারিখ রাত অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় সুরাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাদীর আপন বড় ভাই মোঃ আরিফুল ইসলাম (৩৫) জয়দেবপুুর থানাধীন ভাওয়াল মিজার্পুর সাকিনে মোঃ ইয়াকুব
সাহেব এর বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতঃ কালিয়াকৈর থানাধীন উত্তর গজারিয়া এলাকায় অবস্থিত স্ক্যানডেক্স
টেক্সটাইল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ ফ্যাক্টরীতে ডাইং কিউ.সি পদে চাকুরী করে আসতেছিল। বাদীর উক্ত ভাইয়ের স্ত্রী মোসাঃ লিজা
খাতুন (৩০) তার একমাত্র ছেলে সাব্বির হোসেন (৭) কে সহ পাবনা শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করে। গত
২৪/১২/১৫ ইং তারিখ বেলা অনুমান ০২.০০ ঘটিকার সময় বাদীর ভাইয়ের স্ত্রী লিজা খাতুন তার ব্যবহৃত
বাদীর ভাই আরিফুল ইসলাম এর ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৯৩৯৮৮৩১৩৫ এ কল করে
কথা বলে পরে কল দিবে জানিয়ে মোবাইল লাইন কেটে দেয়। পরবতীরাতে বাদীর ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া
যায়। সংবাদ পেয়ে বাদী তার ভাইয়ের নাম্বারে কল করলে বন্ধ পায়। গত ইং ২৬/১২/১৫ তারিখ সকাল অনুমান
০৯.০০ ঘটিকার সময় জয়দেবপুর থানাধীন চক্রবতীর পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ (বর্তমানে কাশিমপুর) থানাধীন সুরাবাড়ী সাকিনস্থ জনৈক কালী দত্তের বাঁশ বাগানের ভেতর হতে একজন পুরুষ ব্যক্তির গলাকাটা লাশ পেয়ে উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। সংবাদ পেয়ে বাদী সহ তাদের লোকজন গাজীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে গলাকাটা লাশ দেখে বাদীর ভাই মোঃ আরিফুল ইসলামকে সনাক্ত করে। বাদীর ভাইয়ের ডান
হাতের তালু কাটা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা, পুরুষাঙ্গ ও অন্ডাকোষ কাটা দেখতে পায়। এ সংক্রান্তে নিহতের ছোট
ভাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে জয়দেবপুর (বর্তমানে কাশিমপুর) থানার মামলা নং-১০৫ তারিখ-২৬/১২/২০১৫ খ্রিঃ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করেন।
মামলাটি গাজীপুর জেলা ও গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ দীর্ঘ প্রায় ০৩ বছর ১ মাস ১৪ দিন তদন্ত শেষে মামলার রহস্য
উদ্ঘাটন করতে না পারায় মামলাটি তদন্ত শেষে বিজ্ঞ আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করলে বিজ্ঞ আদালত মামলাটি স্বপ্রণোদিত হয়ে পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করলে পিবিআই গাজীপুর জেলা কতীরিক্ত তদন্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হলে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।
ডিআইজি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার. বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়
পিবিআই গাজীপুর ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার, জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এর সার্বিক সহযোগীতায় মামলাটির
তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সুমন মিয়া মামলাটি তদন্ত করেন।
আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম আরিফ গার্মেন্টসে চাকুরী করার পাশাপাশি ঝুঁট ব্যবসা করত। উক্ত
ভিকটিম সুরাবাড়ী সাকিনে উসমান মোক্তার এর বাড়িতে ভাড়া থাকাকালে তার স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত হয়ে
পরে। এছাড়াও ভিকটিম সুরাবাড়ী এলাকায় কিছু জমি ক্রয় করলেও সে জমির দখল আজও বুঝে পায়নি। উপরোক্ত বিষয় দুটিকে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত আসামীরা তাদের সহযোগী আসামীদের পরস্পর যোগসাজসে ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। যেহেতু ভিকটিম ঝুট কেনা বেচা করত। সেই সুযোগে ভিকটিম আরিফকে ঝুট বিক্রির কথা বলে ডেকে এনে তার নিকট থেকে ঝুট ক্রয়ের ৫০,০০০/-টাকা নিয়ে গত ২৪/১২/২০১৫ খ্রিঃ তারিখ রাত অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় কাশিমপুর থানাধীন সুরাবাড়ী সাকিনে জারা ফ্যাক্টরীর পশ্চিমে কালিদত্তের বাঁশ বাগানে ভিকটিকে গলা
কেটে, অন্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ কেটে নিমার্মভাবে হত্যা করে।
এ বিষয়ে পিবিআই এর পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান বলেন, আসামীগন এলাকার জারা ফ্যাক্টরী হতে
ঝুট নামিয়ে বিক্রি করত। ভিকটিম সুরাবাড়ি এলাকায় উসমান মোক্তার এর বাড়িতে অনুমান ০৪ বছর ভাড়া থেকে
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে চাকুরীর পাশাপাশি ঝুঁট ব্যবসা করত। ঝুঁট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে ভিকটিমের সাথে আসামীদের
পরিচয় হয়। ভিকটিম উসমান মোক্তার এর বাড়ীতে বাড়া থাকাকালে তার স্ত্রীর সাথে ভিকটিমের পরকীয়া সম্পক হয়।
এছাড়া ভিকটিম সুরাবাড়ি এলাকায় কিছু জমি ক্রয় করলেও উক্ত জমির দখল বুঝে পায়নি। ঘটনার তারিখে উসমান
মোক্তার ঘটনায় জড়িত আসামীদের কাছে তার স্ত্রীর সাথে ভিকটিমের পরকীয়া সম্পর্কের বিষয়ে বিচার দেয় এবং অপর
আসামীগন ভিকটিমের ক্রয়কৃত জমির দখল নিয়ে ঝামেলার কথা জানালে উক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে ঘটনায় জড়িত
আসামীরা ভিকটিমের নিকট ঝুট বিক্রির কথা বলে ডেকে এনে ৫০,০০০/-টাকা নিয়ে আসামীরা ভিকটিমকে ঘটনাস্থলে
নিয়ে জবাই করে অন্ডকোষ ও পুরুষাঙ্গ কেটে নিমর্মভাবে হত্যা করে।
গ্রেফতারকৃত মোঃ সাইদুর রহমান শাহীন সরকারকে গত ইং ২২/১১/২০২১ খ্রিঃ তারিখ গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে
সোপর্দ করলে উক্ত আসামী নিজেকে জড়িয়ে এবং মামলার ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামীদের নাম উল্লেখ করে
বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক যাব বন্দি সশ্রম কারাদণ্ড প্রধান করেন।